মিতু হত্যা—‘দুই হাজার পৃষ্ঠা’র সেই চার্জশিট শুনানি শুরু আজ

চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আলোচিত দুই হাজার চুরাশি পৃষ্ঠার সেই চার্জশিট শুনানী শুরু হচ্ছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর তার স্বামী ও সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (১০ অক্টোবর) মামলার দিন ধার্য আছে। আদালতে চার্জশিটের ওপর শুনানি হবে বলে জানান বাবুল আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ। চার্জশিট শুনানিতে বাবুল আক্তারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মুহাম্মদ মনিরসহ নতুন কয়েকজন আইনজীবী অংশ নিবেন।

কারণ এই মামলার শুরু থেকেই বাবুল আক্তারের আইনজীবী ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী। সম্প্রতি তিনি জেলা পিপি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এরপর এই মামলায় নতুন আইনজীবী যুক্ত হয়েছেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বের হওয়ার পর চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে। ঘটনার পর তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ প্রথমে বাবুলকে ‘ফেরেস্তা’ আখ্যা দিলেও একটা সময়ের পর থেকে এই হত্যার জন্য তাকে দায়ী করে আসছিলেন।

শুরু থেকে চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মামলাটির তদন্ত করে। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার পিবিআইকে দেয়। সেটির তদন্ত শেষ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে বাবুল পিবিআই থেকে মামলার তদন্তভার সরিয়ে অন্য সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দেন। ইতোমধ্যে পিবিআইতেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে তিন বার।

দীর্ঘ তদন্তের পর হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি করে গত বছরের ১১ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুলকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরদিন ১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার শ্বশুর অর্থাৎ নিহত মিতুর বাবা। তখন থেকে বাবুল আক্তার কারাগারে আছেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।