মেয়ের বিয়ে ঋণের টাকায়, বোঝা বইতে না পেরে মরলেন মা!

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় নুর আয়েশা বেগম (৪০) নামে এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মেয়ের বিয়ে দিতে করা ঋণ ও অর্থনৈতিক চাপে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) ভোরে উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মোল্লাপাড়া এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নুর আয়েশা বেগম একই এলাকার মো. জামশেদুল আলমের (৪৫) স্ত্রী।

নিহতের স্বামী জামশেদুল আলম বলেন, আমি পেশায় একজন সিএনজি অটোরিকশার চালক ছিলাম। বর্তমানে সিএনজি বিক্রি করে দিয়ে বাড়ির পাশে একটি চায়ের দোকান করছি। বেশি রাত করে দোকান চালাই যার জন্য রাতে আমি দোকানে থাকি। আমার দুই মেয়ের মধ্যে এক মেয়েকে বিয়ে দিলেও অপর মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় মায়ের সাথেই থাকেন। আজ ভোরে আমি খবর পাই আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে, আমি দ্রুত বাড়ি গিয়ে দেখি ঘরের ভেতর ঝুলে আছে তার মরদেহ।

তিনি আরও বলেন, পরিবারে অভাবের কারণে আমার স্ত্রী ৩টি এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে থেকে দেড় লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলো। অভাব আর পরিবারের বিভিন্ন চাপ ছিল, সেই চাপেই আত্মহত্যা করেছেন মনে হয়।

স্থানীয়রা জানান, বেশিরভাগ সময় তাদের পরিবারের অভাব অনটন ছিল। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মাঝেমধ্যে ঝগড়াঝাটি হতো আমরা শুনতাম। শুনেছি বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহীদুল আলম বলেন, ঘটনার খবর শুনে রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশকে জানালে পুলিশ সকালে ঘটনাস্থলে আসে।

রাঙ্গুনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খান নুরুল ইসলাম বলেন, নুর আয়েশা নামের নারী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। পরিবারে তার এক মেয়ে প্রতিবন্ধী। তিনি ৩টি এনজিও থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে স্বামীর চায়ের দোকান ভাড়াও দিতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, পরিবারের জন্য বাজার-সদাইও করতে পারে না। সবকিছু মিলে মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছে বলে জেনেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে না।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।