যদি বাড়াবাড়ি করেন আন্দোলন বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়া হবে—তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি চেষ্টা করবে গন্ডগোল লাগানোর জন্য, সেই সুযোগ আমরা তাদেরকে দিব না। তবে কেউ রক্তচক্ষু দেখালে আওয়ামী লীগ জানে কি করতে হবে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী সংগঠন। বিএনপির মির্জা ফখরুল সাহেব কয়দিন পরপর চট্টগ্রামে আসছেন, এখানে এসে লাভ নাই। যদি বাড়াবাড়ি করেন আপনাদের আন্দোলন বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়া হবে।

মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা পূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ ‘শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা’র আয়োজন করে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী। শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, নোমান আল মাহমুদ এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, সফর আলী, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, চট্টগ্রাম—১০ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিউদ্দীন বাচ্চু প্রমুখ।

হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব গত সোমবার চট্টগ্রামে শ্রমিক সমাবেশ করেছে। তিনি সেখানে কথা ঘুরিয়ে দিয়ে বলেছেন আমরা বিদেশী শক্তির ওপর নির্ভর করি না। অথচ বিএনপি দিনের বেলায় তারুণ্যের সমাবেশ, হাঁটা কর্মসূচি, বসা কর্মসূচি, মাঝেমধ্যে দৌঁড় কর্মসূচি দেয়, আবার রাতবিরাতে রুমিন ফারহানা, শ্যামা ওবায়েদ, নিপূন রায়সহ তাদের মহিলা নেত্রীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন এম্বেসিতে ধর্ণা দেয়, উনাদের পায়ে ধরেন। এখন তারা বুঝতে পেরেছে ধর্ণা দিয়ে কোন লাভ হয় নাই। মার্কিন প্রতিনিধি দল এসেও তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কিছু বলে নাই। তারা বুঝতে পেরেছে তাদের এই তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি বিদেশীরাও প্রত্যাখ্যান করেছে।

তিনি বলেন, বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। আজকেও তারা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। আওয়ামী লীগ গণমানুষ থেকে গড়ে উঠা রাজপথের দল, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সমস্ত প্রতিকুলতার মধ্যে উজান ঠেলে এগিয়ে যাওয়ার দল। আমরা রাজপথে আছি, নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে থাকব, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে টানা পঞ্চমবারের মত প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়ে তারপর আমরা ঘরে ফিরে যাব।

যদি বাড়াবাড়ি করেন আন্দোলন বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয়া হবে—তথ্যমন্ত্রী 1

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার পর বিএনপি অনেক উদ্বেলিত হয়েছিল। এখন দেখি বিএনপি ভালো হয়ে গেছে, তাদের মধ্যে একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তারা পুলিশের ওপর আগের মতো হামলা পরিচালনা করার সাহস পাচ্ছেনা। বিএনপির আশা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কিছু বলবে। কিন্তু এনিয়ে তারা টু শব্দটি করে নাই। এজন্য তারা প্রচন্ড হতাশ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সাথে আমাদের দলেরও বৈঠক হয়েছে, তথ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার সাথে ব্যক্তিগতভাবেও বৈঠক হয়েছে। তারা স্পষ্টত বলেছে যে, আমরা বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন কানুন মেনেই এখানে যাতে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয় সেটিই আমরা চাই। তারা তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার এসব কোন কিছুর কথা বলে নাই। আমাদের দেশ চলবে আমাদের সংবিধান ও আমাদের আইন অনুযায়ী। কারো প্রেসক্রিপশনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ চলবে না, এটা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। যার ধমনিতে শিরায় বঙ্গবন্ধুর রক্ত স্রোত প্রবাহমান।

নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কি পদত্যাগ করেন এমন প্রশ্ন রেখে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যেইভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং কন্টিনেন্টাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেই সরকার ক্ষমতায় থাকে, সেটিই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার আগামী নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।