‘যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিকভাবে তাদের মানবাধিকার প্রয়োগ করে’

জাতিসংঘ আজকে মানবাধিকারের ইস্যুতে পক্ষপাতিত্ব করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিকভাবে তাদের মানবাধিকার প্রয়োগ করে থাকে। মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দল কর্তৃক আয়োজিত র‍্যালি ও সমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তারা।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে র‍্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘মানবাধিকার: বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিত’ শির্ষক এ কর্মসূচি। র‍্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চত্বরে এসে সম্পন্ন হওয়ার পর শুরু হয় সমাবেশ।

সমাবেশে সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল হক। পুরো অনুষ্ঠানের সহযোগিতাত ছিল ক্যাম্পেইন এডভোকেসি প্রোগ্রাম (ক্যাপ) ও মিডয়া পার্টনার হিসেবে ছিও ‘প্রেস এক্সপ্রেস’।

সমাবেশে হলুদ দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ সরকার আজকে উন্নয়নের রোল মডেল সে চিত্র তুলে আমাদের তুলে ধরতে হবে। আমরা দেখছি ফিলিস্তিনের জনগণকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে এটা স্পষ্ট মানবাধিকারের লঙ্ঘন। গণতন্ত্রের নামে একটি দল অগ্নিসংযোগ করছে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছে এটাও স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। তবে এ ব্যাপারে বিশ্ব মোড়লগুলো আজ কথা বলছে না। জাতিসংঘ আজকে মানবাধিকারের ইস্যুতে পক্ষপাতিত্ব করছে। গণতান্ত্রিক যে কো ইস্যু আমরা সমর্থন করি। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। কিন্তু গণতন্ত্রের নামে মানুষ হত্যা এগুলো অবশ্যই মানবাধিকার লঙ্ঘন। বিশ্বকে আহ্বান করবো ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদার মুক্ত করতে হবে।

পরিশেষে বলবো দেশের উন্নয়নের জন্য আপনারা কাজ করবেন। শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করবেন।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড.মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিকভাবে তাদের মানবাধিকার প্রয়োগ করে থাকে। যখন রিজিম তাদের পক্ষে থাকে তখন মানবাধিকার সম্পর্কে কোনো কথা বলে না। যখনই রিজিম তাদের পক্ষে না গিয়ে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী গণতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে চায় তখনই তাদের ভিন্ন চেহারা আমরা দেখতে পাই। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধেও আমরা তাদের এ চিত্র দেখতে পেয়েছি। আমরা দেখেছি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নীতির ফলে গাজায় ফিলিস্তিনিদের উপর নির্মম হত্যাকাণ্ড চলছে। ইজরায়েলিদের সমর্থনে ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার যে নীল নকশা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করেছে এটা তারই প্রকৃষ্ট প্রমাণ।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যারা গণতন্ত্রের নাম দিয়ে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করতেছে তাদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের অস্বাভাবিক মিল। আসলে তাদের গণতন্ত্র নয় রিজিম চেঞ্জ অর্থাৎ সরকার পরিবর্তনই মূল লক্ষ্য। তারা এমন একটি সরকার চায়, যে সরকার মার্কিন স্বার্থের প্রতি নতজানু থাকবে, মার্কিন স্বার্থ সমুন্নত রাখবে। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ আদায়ের কোনো উদ্দেশ্য তাদের নেই। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার গত পনের বছর ধরে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রেখেছে সেটাকে ধরে রাখার জন্য এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন কমিশন যে নির্বাচন পরিচালনা করছে সেটাতে জনগণ সকলকে সম্পৃক্ত হয়ে এ দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য আমি আহবান জানাচ্ছি।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন, হলুদ দলের সমন্বয়ক লোকপ্রশাশন বিভাগের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য ড. কাজি এসএম খসরুল আলম কুদ্দুসী, সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য, ক্রিমিনোলোজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরী, প্রাণরসায়ণ বিভাগের অধ্যাপক ড. মু. গোলাম কবীর, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের ড. লায়লা খালেদা (আঁখি), পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আসাদুল হক, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বখতেয়ার উদ্দীন ও ড. হাসিনা আফরোজা শান্তা।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।