রাঙামাটিতে ৩ জনকে হত্যার দাবী সন্ত্রাসী সংগঠনের

রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার দুর্গম বড়থলি এলাকায় তিন ব্যক্তিকে গুলিকরে হত্যা করার কথা নিজেদের ফেসবুক পেইজে প্রকাশ করেছে ‘কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ’ নামের একটি সংগঠন। কেএনএফর-র দাবী নিহতরা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সশস্ত্র সদস্য।

মঙ্গলবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় বড়থলি ইউনিয়নের সাইজান নতুন পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে গণমাধ্যমকে জানান বড়থলি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতুমং মারমা। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ইউনিয়ন সভাপতিও।

আতুমং মারমা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ‘কুকিচীন পার্টি’ নামের একটি নতুন সশস্ত্র সংগঠনের কর্মীরা বড়থলি ইউনিয়নের সাইজান নতুন পাড়ায় এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করে। ঘটনাস্থলে বৃষচন্দ্র ত্রিপুরা, সুভাষ ত্রিপুরা ও সুভাষের ছেলে ধনরা ত্রিপুরা নিহত হয়েছেন। এরা নিরীহ গ্রামবাসী। বিষয়টি আইনশৃংখলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

বড়থলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য ওয়েইবার ত্রিপুরা গণমাধ্যমকে জানান, সাইজান নতুন পাড়াটি তিনটি পরিবার নিয়ে গড়ে ওঠেছে। এলাকাটি খুবই দুর্গম। এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ‘কুকিচীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট– কেএনএফ’।

তবে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পুলিশ কিংবা অন্য কোনো আইনশৃংখলা বাহিনী বুধবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি। স্থানটি দুর্গম হওয়ায় এ বিষয়ে নিশ্চিত সংবাদ জানাতে সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। কারণ সাইজান নতুন পাড়ায় যেতে রাঙামাটি থেকে ৩ দিন সময় লাগে।

রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মাহমুদা বেগম বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি আমরাও শুনেছি। দুর্গম এলাকা হওয়ায় সেখানে পৌঁছানো কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ। তাই আমরা এখনও নিশ্চিত কিছু বলতে পারছি না। নিশ্চিত হয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এদিকে, ‘কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ’ নামের সংগঠনটি তাদের ফেইসবুক পেইজে এক বিজ্ঞপ্তিতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে নিহতদের সন্ত্রাসী বলে দাবী করেছে। সংগঠনটির ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি নিজেকে ‘লে. কর্নেল সলোমন’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

কেএনএফ ফেইসবুকে বিবৃতিতে বলেন, কেএনএফ-এর স্পেশাল কমান্ডো ফোর্স হেড-হান্টার টিম সন্ত্রাসী জেএসএস’র সশস্ত্র বাহিনী জেএলএ-এর জাইজাম বেসমেন্ট ক্যাম্পে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। এতে জেএলএ বাহিনীর তিন জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়। তবে আহত অবস্থায় ট্রেইনিসহ অন্যরা সবাই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ঘটনায় এক শিশু আহত হলে তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দিয়ে মায়ের কোলে রেখে যাওয়া কথাও উল্লেখ করেছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।