চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া মডেল থানা থেকে চারটি ইউনিয়নকে নিয়ে পথ চলা শুরু করেছে ‘দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা’। উপজেলার ৮ নম্বর সরফভাটা, ৯ নম্বর শিলক, ১০ নম্বর পদুয়া ও ১২ নম্বর কোদালা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নতুন থানার উদ্বোধন করেছেন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২ টায় থানা প্রাঙ্গণে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন রাঙ্গুনিয়ার সাংসদ ড. হাছান মাহমুদ। এসময় চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হকসহ পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইফতেখার ইউনুস, রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব মিলকী, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল ইসলাম, সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, শিলক ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু জাফর, কোদালা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম তালুকদার প্রমুখ।
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া নামে নতুন থানা হওয়ায় ৪০ কিলোমিটার দুর্গম পাহাড় ও কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ের চার ইউনিয়নের বাসিন্দাদের মাঝে উচ্ছ্বাস ও আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে। এ চার ইউনিয়ন পাহাড়ি ও দুর্গম এলাকা হওয়ায় এসব এলাকার বাসিন্দারা দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে রাঙ্গুনিয়া সদর থানায় আসা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়তো। এতে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া নামে আলাদা থানা হওয়ায় চার ইউনিয়নের মানুষের কষ্ট লাগব হবে বলে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
নতুন থানার অন্তর্ভুক্ত চার ইউনিয়নে পাহাড়ি পথ হওয়ায় সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। সন্ত্রাসীরা দিনদুপুরে এসব এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল। স্থায়ীভাবে নতুন থানার উদ্বোধন হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আনাগোনায় এলাকার বাসিন্দারা শান্তিতে দিনযাপন করতে পারবে বলে জনমনে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
শিলক ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হাকিম বলেন, ‘দুর্গম অঞ্চল ও পাহাড়ি পথ হওয়ায় এ চার ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত এটি। দিন-রাতে সন্ত্রাসীদের কারণে সাধারণ জনগন স্বস্তিতে থাকতেই পারতো না। এখন দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া নামে নতুন থানা হওয়ায় আমাদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আনাগোনা থাকলে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা কিছুটা হলেও পিছুপা হবে। এ চার ইউনিয়নের সাধারণ জনগনের কথা চিন্তা করে নতুন থানা করায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি মহোদয়কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
এর আগে রাঙ্গুনিয়ার সাংসদ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা নামে আলাদা থানা উন্নীতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ইতোমধ্যে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার জন্য ১ জন পরিদর্শক, ৩ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), ৪ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও ১৮ জন কনস্টেবল পোস্টিং দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ শাখা-৩ ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার গেজেট প্রকাশ করে। এর আগে রাঙ্গুনিয়ার চার ইউনিয়নকে নিয়ে আলাদা থানা গঠনের উদ্যোগ নেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) রাঙ্গুনিয়া মডেল থানাকে বিভক্ত করে দক্ষিন রাঙ্গুনিয়া থানা নামে নতুন থানা গঠন করার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। এতে করে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার অধীনে পরিচালিত হবে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।