রাস্তায় ফেলে রাখা ব্যাগে নকল স্বর্ণের ‘ফাঁদ’, হাতিয়ে নিলো অর্থ-স্বর্ণ

চট্টগ্রামের আনোয়ারার চাতরী চৌমুহনী বাজার থেকে কালাবিবি দীঘির মোড়ে যাওয়ার জন্য একটি সিএনজি অটোরিকশায় ওঠেন জেসমিন আকতার এবং তার ছোট ভাই মোহাম্মদ মানিকুর রহমান (১২)। সিএনজিতে আগে থেকেই বসা ছিলো আরও ২ ব্যক্তি। বঙ্গবন্ধু টানেল সড়ক পর্যন্ত আসতে এক লোকের কাছ থেকে একটি ব্যাগ পড়তে দেখেন সিএনজিচালক। গাড়ি থামিয়ে ব্যাগটি খুলতে দেখেন একটি চিরকুটে মোড়ানো স্বর্ণের বার। সেই স্বর্ণের বার দিয়ে ব্যস্ত রেখে টিস্যু দিয়ে আজ্ঞান করে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন নগদ টাকা এবং তাদের গায়ে থাকা আসল স্বর্ণ।

রোববার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় এমন অভিনব কায়দায় লুটের ঘটনা ঘটেছে চাতরী চৌমুহনী বাজারের দক্ষিণে বঙ্গবন্ধু টানেল সংলগ্ন সড়কে। এ সময় প্রতারক চক্র ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নগদ প্রায় ১০ হাজার টাকা এবং ১ বরি ওজনের স্বর্ণ হাতিয়ে নেন।

ভুক্তভোগী ওই নারী নাম জেসমিন আকতার। তার বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের শোলকাটা হাজীগাঁও এলাকার মফিজুর ইসলামের স্ত্রী। তার ছোট ভাই মোহাম্মদ মানিকুর রহমানসহ (১২) চাতরী চৌমুহনী বাজার থেকে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তারা।

ভুক্তভোগীর ছোটভাই মোহাম্মদ মানিকুর রহমান বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু টানেল সড়ক পর্যন্ত আসতে এক লোকের কাছ থেকে একটি ব্যাগ পড়তে দেখেন সিএনজিচালক। গাড়ি থামিয়ে ব্যাগটি খুলতে দেখেন একটি চিরকুটে মোড়ানো স্বর্ণের বার। সিএনজিচালক আমার বোনকে চিরকুটটি পড়তে বলেন।

তিনি আরও বলেন, গাড়িতে থাকা একজন ২২ ক্যারেট ওজনের গোল্ড লেখা স্বর্ণের বার বের করে আমার বোনের হাতে দেন এবং টিস্যু বের করে আমাদের নাকের মধ্যে দেওয়ার পর আমরা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আমাদের কালাবিবির দিঘির মোড়ে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি বাঁশখালীর দিকে চলে যেতে দেখি আমরা।

তিনি বলেন, চিরকুটে লিখা ছিলো—‘শ্রী অনিল বাবু, নমস্কার নিবেন, আমি আসতে না পারার কারণে আমার মেয়ে শীলার হাতে করে বিদেশি ২২’আর ৫ ভরি ওজনের ১টি স্বর্ণ পাঠালাম। আমার মেয়ের বিয়ের জন্য ১টি চন্দ্র হাঁড়, ১টি চেইন, ১ জোড়া হাতের বালা, ১ জোড়া কান পাখা ও চারটি আংটি বানিয়ে দিবেন। স্বর্ণের মূল্য ৪ লক্ষ বিশ হাজার টাকা। ইতি-দেবাসিস চৌধুরী।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমেদ বলেন, এখনও পর্যন্ত এই ধরনের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিএনজিতে অজ্ঞান করে এমন প্রতারণা প্রায়ই হয়ে থাকে। বিশেষ করে ঈদকে সামনে রেখে মানুষ যখন কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকবে তখন এসব প্রতারকের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যাবে। তাই সিএনজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সকলের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। সেই সাথে অপরিচিত লোক আছে এমন সিএনজি এড়িয়ে চলা এবং অন্ধকার স্থান থেকে গাড়িতে ওঠা বা নামার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা দরকার।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।