শ্যালকের সেই শখের বাইক সড়কে রেখে দুলাভাই উধাও

প্রবাস থেকে ফেরা শ্যালকের দামি ব্রান্ডের মোটরসাইকেল নিয়ে বেকার দুলাভাইয়ের উধাও হয়ে যাওয়া, সেই মোটরসাইকেল বিক্রি করে ফেলার দাবি এবং সবশেষে মোটরসাইকেলের জন্য চাপ দিলে আর কখনো বাড়ি না ফেরার হুমকি।

দুই দিনের নাটকীয়তার পর অবশেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে শখের মোটরসাইকেলটি ফেরত পেলেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা এলাকার বাসিন্দা দুবাই প্রবাসী যুবক মো. রাশেদ (২১)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে দীর্ঘদিন অবস্থানের পর দুই মাস পূর্বে দেশে ফিরে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকায় শখের ইয়ামাহা আর ১৫ ব্রান্ডের মোটরসাইকেলটি কিনেছিলেন প্রবাসী রাশেদ।

হঠাৎ করেই সেটাতে নজর পড়ে যায় রাশেদের মামাতো বোনের স্বামী পেশায় বেকার মো. সাহেদের (২৫)। বুদ্ধি করে বাড়ি যাওয়ার অজুহাত দিয়ে রাশেদের কাছ থেকে মোটরসাইকেলটি ধার নেন তিনি।

কথা ছিল ঘন্টাখানেক পরই ধার নেওয়া মোটরসাইকেল ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু তিনদিন পার হয়ে গেলেও শাহেদের কোনও খোঁজ না পেয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করেন রাশেদ। কিন্তু সাহেদ তখন ভিন্ন এক মানুষ।

ফেরত দেওয়া দূরে থাকুক, সোজা জানিয়ে দেন যে, নিজের ধারদেনা মেটাতে মোটরসাইকেলটি তিনি ১ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। পাশাপাশি সাহেদ হুমকি দেন, মোটরসাইকেল চাইলে তিনি আর কখনো বাড়ি ফিরবেন না।

অনেক চেষ্টা করেও সুরাহা করতে ব্যর্থ হয়ে প্রবাসী রাশেদ মোটরসাইকেলটি ফিরে পেতে পুলিশের শরণাপন্ন হন। মোটরসাইকেল উদ্ধারে রাঙ্গুনিয়া থানা এবং সহকারী পুলিশ সুপার রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করে আবেদন করেন তিনি।

পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। পুলিশি তৎপরতার এক পর্যায়ে মোটরসাইকেলটি ফিরিয়ে দিতে রাজি হন সাহেদ। সবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম নগরীর বাহির সিগনাল শামান্তা ফিলিং স্টেশন এলাকায় বাইকটি রেখে উধাও হয়ে যান দুলাভাই সাহেদ।

পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় সেটা রাশেদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। ভুক্তভোগী প্রবাসী মো. রাশেদ বলেন, প্রবাস জীবনের কষ্টের উপার্জিত অর্থ দিয়ে শখের বাইকটি কিনেছিলাম। বিশ্বাস করে মামাতো বোনের স্বামীকে বাইকটি চালাতে দিয়ে আজ আমি এত বড় বিপদে। ঘটনা ঘটার পর পুলিশের হস্তক্ষেপ ও সংবাদমাধ্যমের ভূমিকায় আমি আমার বাইকটি ফিরে পেয়েছি। আমি খুব খুশি। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

মোটরসাইকেলটি ফিরিয়ে দিতে ভূমিকা পালন করেন চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া-রাউজান সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী প্রবাসী যুবকের আবেদন পাওয়ার পর আমরা সমস্যা সমাধানে তৎপর হই। গতকাল সকালে মূল মালিক তার মোটরসাইকেল বুঝে পেয়েছেন।

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত মো. সাহেদ চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলাধীন উত্তর বুড়িশ্চরের হাকিম মিস্ত্রী বাড়ির মোহাম্মদ ফরিদের পুত্র।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।