সল্টগোলা নৌঘাটে অনিয়ম ও ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন

কর্ণফুলীর উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের ডাঙ্গারচর-সল্টগোলা ঘাটটি যেন এক মরণ ফাঁদ। এই নৌঘাটে যাত্রী পরিবহণে নৈরাজ্যই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রীর বাড়তি চাপ থাকায় দ্বিগুণ-তিনগুণ যাত্রী নিয়ে চলছে নৌযানগুলো। নিধারিত ভাড়া ১০ টাকা হলেও যাত্রীদের গুনতে হয় দ্বিগুণ। যাত্রীও ধারণক্ষমতার দ্বিগুন পারাপার করা হয়ে প্রতি নৌকায়। এতে নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটছে। ইজারাদার ও সাব-ইজারাদারের গাফিলতির কারণে বার বার এই ঘাট পারাপারে দুর্ঘটনা ঘটলেও দেখার যেন কেউ নেই। গত কয়েক বছরে একাধিক দুর্ঘটনায় ১০ জনের অধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর বারোটায় জুলধা ডাঙ্গারচর-সল্টগোলা ঘাটে স্থানীয়দের ব্যানারে যাত্রী হয়রানি বন্ধ করতে ও ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইজারাদারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সল্টগোলা-ডাঙ্গাচর নিরাপদ নৌযান পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ হারুনের সভাপতিত্বে ও সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম হৃদয়ের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ওমর ফারুক, সাইফুল ইসলাম, সাহাবুদ্দিন, ফখরুল ইসলাম, আলী আজগর, আবু তারেব, মনির আহমদ, মোহাম্মদ আব্বাস, নুরুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ মুছা, মোহাম্মদ রায়হান, আরমান, হৃদয়, আলী আকবর।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইজারাদার মোহাম্মদ ওসমান চসিকের রাজস্ব বকেয়া রাখার কারণে চসিকের কালো তালিকা ভুক্ত হলে ঘাটটি সুকৌশল ইজারা নেন একই সংগঠনের মোহাম্মদ ইসহাক। ইজারাদাররা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রাখছে। কেউ প্রতিবাদ করলেও তাদের কপালে জুটে মারধর। এ ঘাট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) থেকে ইজারা দেয়া হলেও যথাযথ তদারকি নেই। চসিক এ ঘাট থেকে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে। কিন্তু ঘাটের যাত্রীসেবায় কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। যাত্রীসেবা ও নিরাপদ যাত্রী পারাপারের লক্ষ্যে ডাঙ্গারচর-সল্টগোলা যাত্রী পারাপার পাটনী শ্রমজীবি সমবায় সমিতি ও ইজারাদারের বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানিসহ নানান অভিযোগ এনে চসিক মেয়র, জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হলেও কেউ কোনো পদক্ষেপ নেননি।

বক্তারা আরও বলেন, ইঞ্জিনচালিত নৌকাগুলো চালিত হয় অদক্ষ চালক দিয়ে। এই ঘাট দিয়ে শিশু ও নারীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের পারাপার। নদীর পাড়েও যাত্রী ওঠানামায় রয়েছে নানা সমস্যা। ঘাটে ইজারাদারা মানুষের তুলনায় নৌকা না রাখায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। বাড়তি ভাড়া দিয়েও গাদাগাদি করে যেতে হয়। ১২জনের নৌকায় ৬০ থেকে ৭০জন যাত্রীও নেওয়া হয়। যাত্রীর এমন ভিড়ের মধ্যে মালামালও বোঝাই করা হয়। নৌকার পাশ দিয়ে বন্দরের বড় জাহাজ আসা-যাওয়ার সময় মনে হয় এই বুঝি নৌকা ডুবে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের ফলে নৌ দূর্ঘটনায় ১০-১২ জন স্থানীয় বাসিন্দা প্রাণ হারায়।

কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা বলেন, ঘাটের ইজারাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। ঘাটটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধীনে। তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।