খেলার মাঠ থেকে যুবলীগ কর্মীকে ধরে অস্ত্র দিয়ে চালান দেওয়ার অভিযোগ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এক যুবলীগ কর্মীকে খেলার মাঠ থেকে ধরে নিয়ে অস্ত্র দিয়ে চালান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করায় প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করছে যুবলীগ কর্মীর পরিবার। ওই যুবলীগ কর্মীর নাম তানভীর হোসেন তুর্কি (২৪)। তিনি সাতকানিয়া উপজেলার ঢেমশা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগীর পরিবার।

তুর্কির বড় ভাই রাহাত হোসেন কফিল লিখিত বক্তব্যে বলেন, ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টার সময় আমাদের স্থানীয় মাঠে ক্রিকেট খেলছিল তুর্কি। এসময় ৮ থেকে ১০ জন সাদা পোশাকধারী পুলিশ আটক করে। ওই সময়ে সাথী এলাকাবাসী গ্রেপ্তারের কারন জানতে চাইলে পুলিশ মারমুখি আচরণ ও ফাঁকা গুলি করে আতংক সৃষ্টি করে তুর্কিকে নিয়ে সাতকানিয়া নিয়ে যায়। সন্ধ্যার কিছু পরে আমার আরেক ছোট ভাই হিরো তুর্কিকে দেখতে গেলে ধরে নিয়ে তাকেও থানার ভিতর কয়েক ঘন্টা আটকে রাখে। এরপর ভয়ভিতী দেখিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়।

তিনি বলেন, রাত ৮ টার দিকে বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা জানতে পারি তুর্কির কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কয়েকঘন্টা পর সাতকানিয়া থানা পুলিশ তুর্কিকে অস্ত্র দিয়ে ছবি প্রকাশ করে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ করে। সাতকানিয়া থানা পুলিশের এরূপ অন্যায় আচরনে এলাকাবাসীসহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সকলে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। আমার ভাই কোন অন্যায় কাজ করার কারনে আইনের চোখে অপরাধী হলে দেশের প্রচলিত আইনে উপযুক্ত বিচারে আমাদের কারো আপত্তি নেই। কিন্তু খেলার মাঠ থেকে প্রকাশ্যে দিবালোকে ধরে নিয়ে নিরস্ত্র কাউকে অস্ত্রধারী বানানো কতবড় অপরাধ হতে পারে? তদন্তের মাধ্যমে আমার ভাইকে অস্ত্রধারী বানানোর ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা ও সাজানো অস্ত্র উদ্ধার মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত প্রার্থনা ও জোর দাবী জানাচ্ছি।

রাহাত হোসেন কফিল বলেন, আপনাদের জ্ঞাতার্থে অস্ত্র উদ্ধার ঘটনার নেপথ্যের বিষয় আপনাদের অবগত করতে চাই। আমার ভাই তুর্কি স্থানীয় যুবলীগ কর্মী। নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভূমিকা রাখার কারনেই রাঘব বোয়াল কারো ইশারায় আজ তাকে সাজানো অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বিগত নির্বাচন চলাকালীন বিভিন্ন মামলায় এবং নির্বাচন পরবর্তী কেরানিহাটের একটি ঘটনায় সম্পূর্ন উদ্দেশ্যপ্রনোধিতভাবে তুর্কিকে আসামি করা হয়।

তুর্কিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও এবং ঢেমশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত এসআই রেজাউল ও জনৈক সোর্সের কয়েকদিন পূর্বের কথপোকথনের একটি অডিও রেকর্ড প্রমান করে তুর্কিকে গ্রেপ্তার ও সাজানো অস্ত্র মামলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। আমাদের হাতে থাকা অডিও রেকর্ডে এসআই রেজাউল তুর্কিসহ রিয়াদ, রুম্মন, সুমন, শহীদ, রিয়াদের ড্রাইভারকে ধরিয়ে দেয়ার বিষয়ে সোর্সকে অনুরোধ করছিলেন। যেখানে এসআই রেজাউল বিশেষভাবে তুর্কির কথা বলে তাকে “অস্ত্রসহ দিয়ে দিব” বাক্যটি বলতে শোনা যায়। প্রত্যুত্তরে সোর্স অস্ত্র না দিয়ে ইতিমধ্যে দায়েরকৃত মামলায় চালান দেয়ার কথা বলতে শোনা যায়। আমাদের হাতে সেই অডিও এবং ভিডিও রেকর্ড আছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ছিলেন যুবলীগ কর্মী তুর্কির মা চেমন আরা, চাচা আহম্মদ কবির, চাচী শাহেদা আক্তার, নুর নাহার, বোন শাহেদা আক্তারসহ আরো অনেকে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।