চট্টগ্রাম বন্দরে ২টি ফিক্সড কনটেইনার স্ক্যানার উদ্বোধন

দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর-চট্টগ্রাম বন্দরে ২টি ফিক্সড কনটেইনার স্ক্যানার উদ্বোধন করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বন্দরের ৪ নম্বর গেটে একটি এবং অপরটি সিপিএআর গেটে বসানো হয়েছে।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্ক্যানাগুলো উদ্বোধন শেষে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি। বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এরিয়া কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আজিম, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ফাইজুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান, বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক, ফাইভ আর অ্যাসোসিয়েটসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট রায়ান জাহিদ রহমান প্রমূখ।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২০১৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এনবিআর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সব বন্দরে স্ক্যানার বসাতে হবে। তাঁর আন্তরিকতায় অনেক স্ক্যানার বসানো হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর রপ্তানি পণ্যের জন্য দুইটি স্ক্যানার বসানোর খবর শুনে প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই খুশি হবেন।

প্রতিমন্ত্রীবলেন, প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দর করেছেন, গভীর সমুদ্রবন্দর করেছেন। মেরিটাইম সেক্টরে আমরা সি ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর হয়ে গেলে মেরিটাইম সেক্টরে আমরা অন্যরকম উচ্চতায় চলে যাব। বে-টার্মিনালে ১২ মিটার ড্রাফটের জাহজ আসবে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি হয়েছে, ব্যস্ততা বেড়ে যাবে। এর জন্য অবকাঠামো এবং রাস্তাঘাট দরকার আমরা তা করছি।

সভাপতির বক্তব্যে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর প্রথম শ্রেণির কেপিআই। বিশ্বের ১০০ শীর্ষ বন্দরে আমরা ৬৭তম। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে বন্দর এগিয়ে চলছে। প্রথমবারের মতো আধুনিক স্ক্যানার স্থাপন করেছি। বন্দরের পিসিটিতে সৌদিভিত্তিক রেড সি গেটওয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বে টার্মিনালের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। স্ক্যানার দুইটি কাস্টম হাউস অপারেট করবে। এর ফলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রপ্তানি কনটেইনার জাহাজীকরণ সম্ভব হবে। বন্দরের নিরাপত্তা ও ভাবমূর্তি বাড়বে।

প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মোস্তফা আরিফুর রহমান খান জানান লিখিত বক্তব্যে বলেন, এ প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন হয় ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। সর্বনিম্ন দরদাতা ফাইভ আর অ্যাসোসিয়েটের দরপত্র ওই বছরের ২৯ নভেম্বর মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেয়। ১২ ডিসেম্বর কার্যাদেশ, ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি চুক্তি সম্পাদন এবং ২৭ ডিসেম্বর প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। বন্দরের নিজস্ব অর্থায়নে ৮৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় সংগৃহীত এফএস৬০০০ মডেলের রেডিও একটিভ পোর্টাল মনিটর সমৃদ্ধ এ স্ক্যানার ঘণ্টায় ১৫০টি কনটেইনার স্ক্যান করতে পারে।

তিনি আরও জানান, ডুয়েল এনার্জির এ স্ক্যানার বোথওয়ে স্ক্যানে সক্ষম। উচ্চতর স্ক্যানিংয়েও এক্স-রে চিত্র অবিকৃত থাকে। জৈব, অজৈব ও মধ্যবর্তী উপাদান নির্দিষ্ট রঙে চিহ্নিত করে। ফলে আইজিএম বহির্ভূত পণ্য শনাক্ত করা যাবে। ইস্পাতে এক্স-রে অনুপ্রবেশ ক্ষমতা ৩৩০ মিলিমিটার বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

উদ্বোধন ও হস্তান্তর শেষে একটি ট্রেইলার সরাসরি স্ক্যানিং টানেলের মধ্য দিয়ে চালিয়ে নেন একজন চালক। স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনটেইনার স্ক্যান হয়ে যায়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান উপস্থিত অতিদের নিয়ে মনিটরিং কক্ষে প্রবেশ করেন এবং বিস্তারিত দেখান।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।