প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক, প্রকাশক ও প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী

চট্টগ্রামের পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলার একাধিক পাহাড় খেকো চক্র পাহাড়-টিলা কেটে সাবাড় করে মাটি লুট করছে। দেশে প্রচলিত আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে গত ২১ মে দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। ‘এক্সকাভেটর দিয়ে পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলায় পাহাড়-টিলা সাবাড়’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর উচ্চ আদালত প্রতিবেদনটি স্বপ্রণোদিত হয়ে আমলে নেয় এবং পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়।

পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর পাহাড় খেকোরা ক্ষিপ্ত হয় প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার ওপর। এই কারণে ওই চক্রের এক সদস্য প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার খ্যাতিমান সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, প্রকাশক কাউসার আহমেদ অপু এবং প্রতিবেদক সফিউল আজমের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।

সংবাদ প্রকাশের পর উচ্চ আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেওয়ায় সংবাদপত্র ও প্রতিবেদকের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে শনিবার (২২ জুলাই) চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে এক মানবববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া পোস্ট অফিস মোড় এলাকায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল।

পটিয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাকিম রানার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিদিনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শফিউল আজম। এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, নাট্যজন ও পটিয়া থিয়েটার সভাপতি মুহাম্মদ ছৈয়দ চেয়ারম্যান, সাংস্কৃতিক জোটের আহবায়ক অধ্যাপক অভিজিৎ বড়ুয়া মানু, শিক্ষক নেতা মাস্টার শ্যামল দে, পটিয়া আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি এডভোকেট খুরশিদ আলম, চন্দনাইশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি এডভোকেট দেলোয়ার হোসেন, সাংবাদিক ও লেখক এস এম এ কে জাহাঙ্গীর, প্রথম আলোর পটিয়া প্রতিনিধি আবদুর রাজ্জাক, বোয়ালখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম মোদ্দাসের হোসেন, পটিয়া প্রেস ক্লাব সহ সভাপতি এ টি এম তোহা, যুগ্ন সম্পাদক সেলিম চৌধুরী, বিকাশ চৌধুরী, রবিউল আলম ছোটন, আবেদুজ্জামান আমিরী, কামরুল ইসলাম, এস এম একে নুর হোসেন, বোয়ালখালী উপজেলার সাংবাদিক নেতা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, চন্দনাইশ সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কমরুদ্দিন, সাংবাদিক আহমদ উল্লাহ, আনোয়ারা প্রেস ক্লাবের যুগ্ন সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও আনোয়ারা সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রূপন দত্ত,

এছাড়াও সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা মোহাম্মদ ইয়াছিন, ইসলামী যুবসেনার পৌরসভার যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ্, কর্ণফুলী উপজেলা সাংবাদিক নেতা আকরাম হোসেন রানা, ইমরান উদ্দিন, সাবেক ছাত্র নেতা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পটিয়া পৌরসভা ছাত্রলীগের আহবায়ক অজয় শীল, পটিয়া উপজেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির দল নেতা সাহেদ খান প্রমূখ।

পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বলেন, ‘এক শ্রেণির পরিবেশ ধ্বংসকারী চক্র এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে। যদি এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

এতে বক্তরা বলেন, ‘এক্সকাভেটর দিয়ে পটিয়া ও চন্দনাইশ উপজেলায় পাহাড়-টিলা সাবাড়’ শিরোনামে প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত সাংবাদটি সম্পূর্ণ সত্য। বেশকিছু পাহাড়-টিলা খেকো দীর্ঘদিন যাবত এ অঞ্চলের কয়েকশ একর পাহাড় ও টিলা কেটে মাটি বাণিজ্য করে আসছিল। তা এ পত্রিকার অনুসন্ধানী রিপোর্টে বেরিয়ে আসায় মাহামান্য হাইকোর্ট রোলনিশি জারি করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ভুমি খেকোরা মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রকৃত বিষয়কে আড়াল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সাংবাদিক পেশাজীবিসহ সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের এ অপকর্মকে রুখে দিতে এ সমাবেশে শপথ করেন। এতে তারা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান। অন্যতায় বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়ার ঘোষণা দেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।