বছরের শেষ দিন পথ চলা শুরু করছে সিএমপির ডগ স্কোয়াড—K9

চট্টগ্রাম বন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা, চট্টগ্রামে বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ সূত্রে বিদেশিদের নিরাপত্তা, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে বিদেশিদের যাতায়াতসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে বছর দেড়েক আগে পুলিশ সদর দপ্তরে প্রশিক্ষিত কুকুরের ডগ স্কোয়াড চেয়েছিল চট্টগ্রাম নগর পুলিশ—সিএমপি।
তৎকালীন সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর (বর্তমানে ডিআইজি—স্পেশাল ব্রাঞ্চ) ২০টি কুকুর চাইলেও ৯টি কুকুরের ডগ স্কোয়াড পেয়েছে সিএমপি। ৩১ ডিসেম্বর (রোববার) বেলা ১১টায় সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় ডগ স্কোয়াড উদ্বোধন করবেন।
ডগ স্কোয়াড থাকবে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অধীনে। ডগ স্কোয়াড দেখভাল করার জন্য ২৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা-সদস্য দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার লিয়াকত আলী খান চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, সম্প্রতি যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে আধুনিক, নিত্য নতুন ও বিশেষ কৌশলে সংঘঠিত অপরাধ মোকাবেলার নিমিত্তে কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের সক্ষমতা বাড়ানো, অপারেশনাল কাজে ব্যবহার, অপরাধ নিয়ন্ত্রনের লক্ষ্যে মাদক দ্রব্য চিহ্নিতকরণ ও বিস্ফোরক দ্রব্য সনাক্তকরণ সহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রনে একটি পূর্ণাঙ্গ ডগ স্কোয়াড (Canine Unit) গঠন করা হয়েছে। অত্র স্কোয়াডে বর্তমানে ৯ টি ডগ (Canine) রয়েছে যার মধ্যে ৫ টি বিস্ফোরক দ্রব্য সনাক্ত করতে এবং ৪টি মাদক দ্রব্য চিহ্নিত করতে সক্ষম।

সিএমপির স্টেট এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ ডগ স্কোয়াডের স্থাপনা নির্মাণ করছে। স্টেট এন্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের উপ-কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) এসএম মোস্তাইন হোসাইন বলেন, সিএমপির মনসুরাবাদ পুলিশ লাইনে ডগ স্কোয়াড এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১০টি ক্যানেল সমৃদ্ধ একটি আধুনিক দ্বিতল ভবন নির্মান করা হয়ে। যেখানে রয়েছে ডগের পরিচর্যা কেন্দ্র, গ্রুমিং স্পেস, রান্না ঘর, গোসলের ব্যবস্থা, নিয়মিত প্রশিক্ষণের জন্য উন্মুক্ত মাঠ ও বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কাঠামো। উক্ত ভবনে সার্বক্ষণিক সিসি টিভি মনিটরিং ব্যবস্থা রয়েছে। অত্র ডগ স্কোয়াড (Canine) পরিচালনার জন্য বর্তমানে ২৭ জন জনবল রয়েছে। যারা নেদারল্যান্ড এবং ডিএমপি থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছে।

প্রসঙ্গত, ১২ জার্মান শেফার্ড ও ১৩ ল্যাব্রাডার নিয়ে ১৯৯৮ সালের ২০ নভেম্বর পুলিশ বাহিনীতে ডগ স্কোয়াড যুক্ত হয়। এরপর ২০০৪ সালের ১৯ আগস্ট ৪০টি কুকুর নিয়ে র‌্যাবেও ডগ স্কোয়াড যুক্ত হয়। পুলিশ বাহিনীতে ডগ স্কোয়াড যুক্ত হওয়ার ২৩ বছর পর চট্টগ্রামের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ডগ স্কোয়াড যুক্ত হচ্ছে।

বর্তমানে দেশে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবিসহ একাধিক সংস্থা বিস্ফোরক শনাক্ত ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজে ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করছে। অবৈধ মালামাল কিংবা নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন পণ্য শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যাতে কেউ পরিবহন করতে না পারে তা আরও কঠোরভাবে নিশ্চিত করবে ডগ স্কোয়াড। পাশাপাশি চট্টগ্রামে বিদেশিদের বিনিয়োগকে কেন্দ্র করে তাদের যাতায়াত নিরাপদ-নির্বিঘ্ন করতে ডগ স্কোয়াড সময় উপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন চট্টগ্রামের সচেতন মহল।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।