চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামাতের জয়জয়কার

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত-সমর্থিত ঐক্য পরিষদের জয়জয়কার। অ্যাডভোকেট নাজিম-রাজ্জাক-কাশেম প্যানেল সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩টি পদে বিজয়ী হয়েছে। অপর দিকে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ পেয়েছে সহসভাপতিসহ ৭টি পদ। স্বতন্ত্র পেয়েছে ১টি পদ।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ শেষে রাত সাড়ে ৩টায় এই ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ২১টি পদে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে সম্পাদকীয় পদ ১০টি, নির্বাহী সদস্য পদ ১১টি। নির্বাচনে সমন্বয় পরিষদ, ঐক্য পরিষদ ও স্বতন্ত্রের মোট প্রার্থী ছিলেন ৪৫ জন।
এবার ৫ হাজার ৬৩৬ জন ভোটারের মধ্যে ৪ হাজার ৪৪৯ জন আইনজীবী তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।

এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে ঐক্য পরিষদের মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী ২ হাজার ৭৯৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় বারের মতো জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমন্বয় পরিষদের আবু মোহাম্মদ হাশেম পেয়েছেন ১ হাজার ৫৯৪ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক পদে ঐক্য পরিষদের মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক ২ হাজার ২৮৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমন্বয় পরিষদের মুহাম্মদ ফখরউদ্দিন জাবেদ পেয়েছেন ২ হাজার ১০৭ ভোট।

সিনিয়র সহসভাপতি পদে ঐক্য পরিষদের মো. আবদুল কাদের ২ হাজার ২৬৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমন্বয় পরিষদের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আজিজ উদ্দীন (হায়দার) পেয়েছেন ২ হাজার ১২৩ ভোট।

সহসভাপতি পদে সমন্বয় পরিষদের বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজুর রহমান খান ২ হাজার ৪৫৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্য পরিষদের মো. জালাল উদ্দিন পেয়েছেন ১ হাজার ৯৩০ ভোট।

সহসাধারণ সম্পাদক পদে ঐক্য পরিষদের মোহাম্মদ কাশেম কামাল ২ হাজার ৪৮৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমন্বয় পরিষদের মো. আখতারুজ্জামান (রুমেল) পেয়েছেন ১ হাজার ৭৫৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল উদ্দীন পেয়েছেন ৯৯ ভোট।

অর্থ সম্পাদক পদে ঐক্য পরিষদের কাজী মো. আশরাফুল হক আনসারী (জুয়েল) ৩ হাজার ২২১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমন্বয় পরিষদের খাইরুন্নিসা আখতার (নিসা) পেয়েছেন ১ হাজার ১৮৩ ভোট।

পাঠাগার সম্পাদক পদে ঐক্য পরিষদের আহমেদ কবির (করিম) ২ হাজার ৫৪২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমন্বয় পরিষদের মুহাম্মদ আফজাল হোসাইন পেয়েছেন ১ হাজার ৮৩৭ ভোট।

সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ঐক্য পরিষদের মারুফ মো. নাজেবুল আলম ২ হাজার ৫৭০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমন্বয় পরিষদের নাসরিন আখতার চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ৪৭৮ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী সুচিত্রা লালা মুন্নী পেয়েছেন ৩৭৮ ভোট।

ক্রীড়া সম্পাদক পদে সমন্বয় পরিষদের মো. হাবিবুর রহমান ২ হাজার ৪১২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্য পরিষদের সরোয়ার হোসাইন (লাভলু) পেয়েছেন ১ হাজার ৯৫৯ ভোট।

তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে সমন্বয় পরিষদের অভিজিত ঘোষ ২ হাজার ৩৭৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঐক্য পরিষদের আবদুল জব্বার পেয়েছেন ২ হাজার ১০ ভোট।

এ ছাড়া নির্বাহী সদস্যের ১১টি পদের মধ্যে ৬টিতে ঐক্য পরিষদ ও ৪টিতে সমন্বয় পরিষদ ও একটিতে স্বতন্ত্র জয়লাভ করেছে।

গত বছরের নির্বাচনে সভাপতিসহ ৯টি পদে জয় পেয়েছিল ঐক্য পরিষদ। ঐক্য পরিষদ থেকে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদকসহ ১২টি পদে জয়লাভ করেছিল সমন্বয় পরিষদ। সমন্বয় পরিষদ থেকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন এ এস এম বজলুর রশিদ।

প্রসঙ্গত, গত ৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতির নির্বাচনেও বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত কর আইনজীবী ঐক্য পরিষদ সভাপতি-সেক্রেটারিসহ ১১টি পদে জয়লাভ করেছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত কর আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ ও দল নিরপেক্ষ সম্মিলিত প্যানেলের প্রার্থীদের তিনটি করে সদস্যপদ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।