শতাধিক যাত্রী নিয়ে ৫ ঘণ্টা ডুবোচরে আটকা লঞ্চ, ইফতার জোটেনি কারো!

নাব্যতা সঙ্কটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে রাঙামাটি-লংগদু রুটের লঞ্চ চলাচল। এই রুটের কোন না কোন ডুবোচরে প্রায়ই আটকে পড়ছে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো। আর এতে করে যেমন ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে নদী পথে আবার যাত্রীদের বাড়ছে খরচ, নষ্ট হচ্ছে সময়।

শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় রাঙামাটি থেকে লংগদু উপজেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যাত্রী বোঝাই একটি লঞ্চ সন্ধ্যা ৬টার দিকে (ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে) ফোরেরমূখ নামক স্থানে ডুবোচরে আটকে যায়। টানা ৫ ঘণ্টা লঞ্চটি চরে আটকে থাকার কারণে যাত্রীরা অনেক ভোগান্তির শিকার হন।

এদিকে ইফতারের নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও লঞ্চে ইফতার ব্যবস্থা না থাকায় পানি ছাড়া কিছুই জোটেনি যাত্রীদের। সন্ধ্যা পেরিয়ে নামে রাত, নারী ও শিশুদের চোখে মুখে নেমে আসে অজানা আশঙ্কা; বাড়তে থাকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা!

লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার বেলা আড়াইটায় রাঙামাটি ঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি লংগদু উপজেলার মাইনীমূখ বাজার লঞ্চঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। লঞ্চটি কাট্টলী বিল শেষে ফোরেরমূখ বিল পার হওয়ার সময় সন্ধ্যাবেলা ডুবোচরে আটকে যায়। দীর্ঘসময় চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে মাইনী ঘাটে থাকা আরেকটি লঞ্চের সহযোগিতায় ১১টা ৪৫ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছায় লঞ্চটি। তবে ডুবোচরে আটকে পড়ায় লঞ্চ চালকের অসাবধানতাকেও দায়ী করছেন কেউ কেউ।

লঞ্চের যাত্রী মো. সুজন (৪০) বলেন, দীর্ঘ সময় লঞ্চ নদীতে আটকে যাওয়ায় আতঙ্ক বিরাজ করেছে জনমনে। অন্যদিকে ছিল শিশুসহ বড়দের ইফতার নিয়ে দুশ্চিন্তা। যদিও লঞ্চের ক্যান্টিনে হালকা খাবারের ব্যবস্থা যা হয়েছিল তা তুলনামূলক দাম ছিল বেশি।

যাত্রীরা অভিযোগ করে আরও বলেন, মাইনী থেকেও ১০-১৫ কিলোমিটার দূরে অনেকের গন্তব্য। এ মধ্যরাতে বাড়ি যেতে কারো প্রয়োজন মোটর বাইক, কারো প্রয়োজন ইঞ্জিন চালিত নৌকা। এই রাতে আর বাড়ি ফিরতে পারবে না বলে অভিযোগ করেন তারা। নিরাপদে রাত্রিযাপন ও সেহরির নিশ্চয়তা, কোনটাই ছিল না তাদের।

সচেতন নাগরিকরা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা সংকটের কারণে প্রায়ই এরকম হয়রানির শিকার হতে হয়। অথচ প্রশাসন এখনো নির্বিকার, উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই নৌপথ। প্রায় প্রতি বছরই পলি জমে সৃষ্টি হয়েছে অনেক ডুবোচর। ফলে যাতায়াত অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এই নৌ-পথটি। দ্রুতই ড্রেজিং করা না হলে কিংবা বিকল্প সড়ক সংযোগ স্থাপন করা না হলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে জেলা সদরের সাথে লংগদু ও বাঘাইছড়ির উপজেলাবাসীর নৌপথে যোগাযোগ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।