‘দেশে এমবিবিএস পড়াশোনা শেষ করে চাকরি নিয়ে চলে যাই ইরান। আশির দশকের শেষ দিকে আমি ইরান থেকে ছুটিতে দেশে বেড়াতে এলাম। বন্ধু-বান্ধবরা দেখা করে বলল- চট্টগ্রামে প্রসূতিদের প্রয়োজন ছাড়াও অর্থ লোভে সিজার করা হয়। যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইথিকসের সাথে যায় না। চট্টগ্রাম শহর আমাদের শহর, আমরা প্রাইভেট হাসপাতাল করে দেখিয়ে দিবো- অযথা সিজার ছাড়াও স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া যায়।’
‘এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই। যখন রাজি হই তখন বন্ধুরা আরও একটা বিষয় সামনে আনলো। তলপেটের ব্যথা হলেই নাকি দেশে অ্যাপেন্ডিক্সের অপারেশন করা হতো। তখন আমরা একটি প্রাইভেট হাসপাতালের উদ্যোগ নিই। আজ থেকে ৪২ বছর আগে অনৈতিক চিকিৎসার বিরুদ্ধে আমাদের পথ চলা শুরু।’
বন্দর নগরীর প্রথম দিকের আধুনিক প্রাইভেট হাসপাতাল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালের জন্মকথা নিয়ে এমনই স্মৃতিচারণ করলেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রবীণ চিকিৎসক ডা. একেএম ফজলুল হক।
তিনি আরও বলেন, এখন একটা হাসপাতাল পরিচালনা যত সহজ, আজ থেকে চার দশক আগে বিষয়টা তত সহজ ছিল না। নানান প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আমরা আজকের অবস্থানে।
ডা. একেএম ফজলুল হক বলেন, সময়ের ব্যবধানে আমরা আমাদের চিকিৎসা সেবায় যুক্ত করেছি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। চট্টগ্রামের প্রথম হার্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে। আমাদের হার্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠার পর রোগীদের মাঝে চিকিৎসা নিতে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতাও কমেছে। কারণ তারা বিদেশের চিকিৎসা মেট্রোপলিটনেই পাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, হার্ট সেন্টারের মতো মেট্রোপলিটন হাসপাতাল প্রতিটি বিভাগে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও মানবিক চিকিৎসকের সমন্বয়ে টিম গঠন করে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ২৪ ঘন্টা চালু থাকে।
মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ইউরোলজি, কিডনী রোগ, নিউরো মেসডিসিন, অর্থোপেডিকস, গ্যাসট্রোলজী, নবজাতক ও শিশু, প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ এবং অভ্যন্তরীণ মেডিসিন রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ দ্বারা চিকিৎসাপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
মেট্রোপলিটন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রয়েছে রোগ নির্ণয়ের আধুনিক সব যন্ত্রপাতি। করোনা মহামারিতে চট্টগ্রামের যে কয়টি ল্যাব করোনা পরীক্ষার উপযুক্ত ছিল তাদের একটি হলো মেট্রোপলিটন ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
মেট্রোপলিটনের পুরতান ভবন ভেঙ্গে গড়া হচ্ছে নতুন ভবন। সেই ভবনে আরও অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবার পরসা সাজানোর স্বপ্ন দেখেছেন ডা. একেএম ফজলুল হকসহ মেট্রোপলিটন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।