আর্জেন্টিনা ও ইতালির লড়াইটা শুধু একটা ম্যাচে সীমাবদ্ধ ছিল না। অনেক কিছু প্রমাণেরও ছিল। ইউরোপের চকচকে সম্প্রচার, ঝকঝকে মাঠ, অর্থের প্রাচুর্যের কাছে ল্যাটিন ফুটবল শৈলি যে হারিয়ে যায়নি বিশ্বকে তা দেখানোর ছিল।
চ্যালেঞ্জ জয়ের ভার ছিল লিওনেল মেসি-ডি মারিয়ার কাঁধে। তারা পেরেছেন। ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে ফিনালিসিমা জিতেছে মেসির আর্জেন্টিনা।
করোনার কারণে ইউরো আসর এক বছর পিছিয়ে গত বছর মাঠে গড়ায়। একই সময় মাঠে গড়ায় কোপা আমেরিকা। ইউরোপের ফুটবল জৌলুসের কাছে পাত্তা পায়নি মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের লড়াই। ইউরোপের কাছে ল্যাটিন ফুটবল হারাতে বসেছে এই রব উঠেছিল। কিংবদন্তি ডিয়াগো ম্যারাডোনার স্মরণে তাই কনমেবল ও উয়েফা ফিনালিসিমার আয়োজন করে। মহাদেশীয় এই লড়াইয়ে চ্যাম্পিয়ন হলেন মেসিরা।
বুধবার রাতে ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বলের দখল, আক্রমণ মিলিয়ে পুরো ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করেছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ২৮ মিনিটে তার ফল পায় আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। লিওনেল মেসি দুর্দান্তভাবে বল নিয়ে ইতালির বক্সে ঢুকে পড়েন। দারুণ এক থ্রু দেন একদম গোল মুখে। বল জালে জড়িয়ে দেন লউতারো মার্টিনেজ।
প্রথমার্ধের শেষ বাঁশির আগে ব্যবধান দ্বিগুন করেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। এবার তার গোলে সহায়তা দেন মার্টিনেজ। ইন্টার মিলান স্ট্রাইকারের বল ধরে গোল মুখের সামনে গিয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসে বল চিপ করে জালে জড়িয়ে দেন পিএসজি ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া ডি মারিয়া।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণ আরও শানিত করে আলবিসেলেস্তেরা। ঘুরে দাঁড়ানোর কোন সুযোগই তারা দেয়নি ইতালিকে। দুর্দান্ত তিনটা শট নেন ডি মারিয়া। অন্যরাও একের পর এক আক্রমণ তোলে। তবে তারা জালের দেখা না পেলেও শেষ সময় বদলি নামা পাউলো দিবালা জয়টাকে আরও বড় করে নেন।
ম্যাচের যোগ করা সময়ে তিনি আজ্জুরিদের কফিনে ঠুকে দেন শেষ পেরেক। তার গোলে সহায়তা দেন আর্জেন্টাইন কিং লিও। দলকে এনে দেন শিরোপা।
জাতীয় দলের জার্সিতে ১৬ বছর শিরোপাহীন ছিলেন সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড লিও মেসি। তিনিই কিনা এক বছরের মধ্যে জিতলেন ডাবল। তার সামনে এবার জাতীয় দলের জার্সিতে ট্রেবলের সুযোগ। পারবেন কি মেসি। ৩৫-এ পা দেওয়া মেসি ও তার দল ইতালিকে উড়িয়ে, ইউরোপ সেরা দলটির গোলমুখে নয়টি অসাধারণ শট নিয়ে আশাটা ভালো মতোই দেখাচ্ছেন ভক্তদের।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।