খালি নেই কক্সবাজারের কোন হোটেল-রিসোর্ট

ঈদের ছুটিতে পর্যটকে টইটম্বুর

ঈদের ছুটিতে দেশের প্রধান অবকাশ যাপন কেন্দ্র কক্সবাজারে এখন পর্যটকে টইটুম্বর। হোটেলগুলোতে খালি নেই কোন কক্ষ। যানবাহনের চাপে শহরের রাস্তাঘাটে চলছে মারাত্মক ট্রাফিক যট।

বিশেষ করে পর্যটন এলাকায় তিন মিনিটের রাস্তা পার হতে লাগছে ত্রিশ মিনিটের বেশি সময়। হোটেল মালিকরা বলছেন, কক্সবাজারে পর্যটকদের এই উপচে পড়া ভিড় কাল শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

এবারের ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের আগমন শুরু হয়েছে ঈদের কয়েকদিন আগেই। ঈদের দিন থেকে শহরের তারকা মানের হোটেলগুলোতে প্রায় শতভাগ কক্ষ অতিথিপূর্ণ হচ্ছে। আর বৃহস্পতিবার শহরের বিভিন্ন মানের ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেলের প্রায় শতভাগ কক্ষ অতিথিপূর্ণ হয়ে যায়। আগামী শনিবার পর্যন্ত এ চাপ অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন হোটেল মালিকরা।

হোটেল মালিকদের মতে, প্রতিবছর দুই ঈদ ছাড়াও থার্টিফার্স্ট’র ছুটিতে কক্সবাজারে সর্বোচ্চ সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। এসময় হোটেল-মোটেলে শতভাগ রুম বুকিং থাকে। এবারের ঈদের ছুটিতেও প্রত্যাশিত সংখ্যক পর্যটক এসেছেন কক্সবাজারে।

শুধু তাই নয়, এবারের ঈদের ছুটিতে ঈদের আগেই আগাম পর্যটকের ঢল শুরু হয় বলে জানান ট্যুরিজম সার্ভিস এসোসিয়েশন জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার।

তিনি জানান, বর্তমানে কক্সবাজার শহরেই রয়েছে ৫ শতাধিক আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউস। যেখানে প্রায় দেড়লাখ পর্যটক রাত যাপন করতে পারে। এছাড়া শহরের বাইরে ও সমুদ্র তীরবর্তী উপ-শহরগুলোসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে রয়েছে ছোটবড় আরো প্রায় ৩শ আবাসিক হোটেল ও কটেজ, যেগুলোতেও প্রায় ১৫ হাজার পর্যটকের রাত যাপনের সুবিধা রয়েছে।

কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের (টোয়াক বাংলাদেশ) প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি এসএম কিবরিয়া খান জানান, ঈদের ছুটিতে আসা পর্যটকরা শহরে ট্রাফিক জ্যামের কারণে চরম বিরক্তি প্রকাশ করছে। শহরবাসীও একই কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। পাশাপাশি যানবাহন সংকটের কারণে কয়েকগুণ অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে যানবাহনগুলো।

ঢাকা থেকে সপরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা উপজেলা প্রকৌশলী আরজুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে লাবণী সৈকত থেকে সিএনজিযোগে দরিয়ানগর গেলাম দেড়শ টাকা ভাড়ায়, আর সন্ধ্যায় ফেরার সময় অটোতে (ই-বাইক) ভাড়া নিল ৩শ টাকা। সংকট হলেই সুযোগ নেয় যানবাহনগুলো।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ঈদের আগেরদিন থেকে শহর ও সমুদ্র সৈকতকে বিশেষ নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেছে পুলিশ। আগামী ৯ মে পর্যন্ত তিন স্তরের এ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকদের বাড়তি চাপের কথা মাথায় রেখে পর্যটন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সহ অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসনের ৪ জন সহকারী কমিশনারকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত ২ মে তাদেরকে মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হয়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।