চোরাই মোবাইল বাজারে ছাড়তে সময় নিচ্ছে চোর চক্র

ছিনতাই হওয়া কিংবা চুরি করা মোবাইল সেট কমপক্ষে ছয় মাস সময় নিয়ে চোর চক্র বাজারে ছাড়ছে। মোবাইলের মালিক পক্ষ কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে হাল ছেড়ে দেয় সে জন্যই এই সময় ক্ষেপন। শতাধিক মোবাইল সেট ও আইএমইআই পরিবর্তনের যন্ত্রপাতিসহ আটক হওয়া যুবকরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) দক্ষিণ জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) জসিম উদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ডিসি দক্ষিণের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এডিসি আমিনুল ইসলাম, এসি (কোতোয়ালী) মো. মুজাহিদুল ইসলাম, ওসি (কোতোয়ালী) জাহেদুল কবির।

ডিসি দক্ষিণ জসিম উদ্দিন বলেন, আটক তিন যুবকের একজন ইতোপূর্বে একটি মোবাইল কোম্পানীতে চাকুরি করতো। সেখানে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আয়ত্ব করে। পরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে মোবাইলের আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপেমেন্ট আইডেনটিটি) পরিবর্তনের অবৈধ কাজে নামে। আর তার এই দক্ষতাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে চোরাই মোবাইলের একটি চক্র।

তিনি আরও বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ এক মিনিটে তারা আইএমইআই পরিবর্তন করতে সক্ষম সে। আগে মোবাইল ছিনতাইয়ের পর তারা বাজারে বিক্রি করে দিতো। কিংবা চট্টগ্রামের বাইরেও বিক্রি করতো। পুলিশের তৎপরতায় তারা কৌশল পরিবর্তন করেছে। এখন কমপক্ষে ছয় মাস সময় নিয়ে এসব মোবাইল তারা বাজারে ছাড়ে। যাতে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া ব্যক্তি মোবাইলের আশা ছেড়ে দেয় কিংবা পুলিশ অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়।

চোরাই মোবাইল বাজারে ছাড়তে সময় নিচ্ছে চোর চক্র 1

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে আটক হওয়া চক্রগুলোর সাথে নতুন এই চক্রের যোগসাজশ আছে কিনা সেটা তদন্ত হচ্ছে। এই চক্রের পিছনে কেউ থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেলে সাজ্জাদ নামে এক যুবকের ব্যাগ তল্লাশী করে পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোমিনুল হাসান ৫টি মোবাইল সেট পান। জিজ্ঞাসাবাদে সাজ্জাদ আইএমইআই পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তিতে উঠে আসে সিডিএ রয়েল প্লাজার ইনোভেটিভ ফোন কেয়ার থেকে সে আইএমইআই পরিবর্তন করিয়ে নেয়। আর ইনোভেটিক ফোন কেয়ারের মালিক হাবিবুল্লাহ মিসবাহ ও তার কর্মচারী রাশেদ আইএমইআই পরিবর্তন করে দেয়।

পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হাবিবুল্লাহ মিসবাহ ও রাশেদকে আটকে পাশাপাশি বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ১১৭টি মোবাইল সেট, আইএমইআই পরিবর্তনের সফটওয়ার ইন্সটলকরা তিনটি ল্যাপটপ জব্দ করে।

এই মামলা তদন্তে উঠে আসে রিয়াজদ্দিন বাজারের তামাকুমন্ডি লেইনের হক শপিং সেন্টারের চৌধুরী ডট কম নামের দোকানের মালিক জয় চৌধুরীর নাম। জয় চৌধুরী এই চক্রের তিনজন আটক হওয়ার পর গা ঢাকা দিয়েছেন। জয় চৌধুরির বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী।

অপর তিন আসামির মধ্যে সাজ্জাদ ফেনী সদরের নতুন বাজার এলাকার মো. সেলিমের ছেলে। হাবিবুল্লাহ মিসবাহ সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের কবির আহমেদের ছেলে। রাশেদ ফটিকছড়ির উত্তর ধুরুংয়ের বদিউল আলমের ছেলে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।