বান্ধবীকে হত্যার দৃশ্য দেখে ফেলায় খুন হন অপর বান্ধবীও, সেই খুনির ফাঁসি

সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা সুকলতি ত্রিপুরা। তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা দৃশ্য দেখে ফেলে অপর বান্ধবী ছবি ত্রিপুরা। পাষণ্ডরা রেহায় দেয়নি ছবি ত্রিপুরাকেও। তাকেও হত্যা করা হয় পাশবিক কায়দায়। সেই দুই কিশোরী হত্যার দায়ে আবুল হোসেনকে (২৯) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবুল হোসেন, সীতাকুণ্ড পৌরসভার আবেদীন চৌধুরী পাড়ার বাসিন্দা।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলীম উল্লাহ এ রায় দেন। একই রায়ে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং ওমর হায়াত মানিক নামে অপর এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী অশোক কুমার দাশ চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, সীতাকুণ্ড ত্রিপুরা পাড়ার সুকলতি ত্রিপুরা ও তার বান্ধবী ছবি ত্রিপুরাকে ধর্ষণের পর হত্যার অপরাধে আসামি আবুল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ওমর হায়াত মানিক নামে এক আসামিকে খালাস দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আবুল হোসেন ও মানিক উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবুল হোসেনকে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তার অবহেলা ও তদন্তে গাফিলতির কারণে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের আইজিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

২০১৮ সালের ১৮ মে সীতাকুণ্ড পৌরসভার জঙ্গল মহাদেবপুর পাহাড় থেকে পুলিন কুমার ত্রিপুরার মেয়ে সুকলতি ত্রিপুরা (১৫) ও সুমন ত্রিপুরার মেয়ে ছবি রানী ত্রিপুরার (১১) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ উদ্ধারের পর তৎকালীন সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শম্পা রাণী সাহা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘সুকলতিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে ছিল হোসেন। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিশ হয় এবং আবুলকে ভর্ৎসনাও করা হয়। অপমানের প্রতিশোধ নিতে সে সুকলতিকে হত্যা করতে গেলে ছবি রানী তা দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করা হয়। দুজনকেই দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় ১৯ মে ২০১৮ নিহত ছবি রানী ত্রিপুরার বাবা সুমন ত্রিপুরা বাদী হয়ে আবুল হোসেনকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত তিনজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকালীন সময়ে মামলায় অভিযুক্ত রাজীব নামের এক আসামি দুষ্কৃতকারীর গুলিতে নিহত হয়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলার ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।