৪০ বছরে পাহাড় খেকোদের পেটে চট্টগ্রাম নগরীর ১২০ পাহাড়

চট্টগ্রামে সেমিনারে বেলার তথ্য

গত চার দশকে চট্টগ্রাম নগরীতে ১২০টির মতো পাহাড় বিলুপ্ত হয়েছে বলে এক সেমিনারে তথ্য প্রকাশ করেছেন আলোচকরা। যার বেশির ভাগই পাহাড় খেকোদের হাতে বিলুপ্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি-বেলার আয়োজনে চট্টগ্রাম মহানগরের পাহাড় রক্ষায় করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

সোমবার (৩০ মে) নগরীর জিইসি মোড়স্থ একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. খালেদ মেসবাহুজ্জামান।

তিনি বলেন, ৪০ বছর আগে চট্টগ্রাম নগরীতে ২০০ পাহাড় ছিল। যার ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। চট্টগ্রামে বর্তমানে টিকে থাকা পাহাড় রক্ষায় জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন এক হয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার বিকল্প নাই।

লিখিত প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. খালেদ মেসবাহুজ্জামান বলেন, পাহাড় হচ্ছে পৃথিবীতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় খুঁটির মতো। যা প্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রতিহত করার পাশাপাশি মানুষ এবং জীব বৈচিত্র্যের সুপেয় পানির আধার। ক্রমাগত পাহাড় ধ্বংস হয়ে গেলে চট্টগ্রাম মহানগরী পরভূমিতে পরিনত হবে।

এতে তাপমাত্রা বৃদ্ধিপাবে উল্লেখ ড. খালেদ বলেন, ক্রম বৃদ্ধিমান ইট ক্রংক্রিটের সৃষ্ট উত্তাপ পরিশোধন করার বিকল্প না থাকলে নগরীর তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাবে। পাহাড় কেটে আবাসিক বা বাণিজ্যিক ভবন করে মানুষ যতটুকু আর্থিক লাভবান হচ্ছে বাস্তবে প্রাকৃতিক ক্ষতির পরিমান অনেক বেশি।

অন্যান্য বক্তারা বলেন, ২০০৭ সালে পাহাড় ধ্বসে ১২৯ জন মারা যাওয়ার পর শক্তিশালী পাহাড় রক্ষা কমিটির প্রদত্ত সুপারিশ বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। পাহাড় রক্ষায় বেলা হাইকোর্টে দায়েরকৃত মামলায় বিগত ১৯ মার্চ ২০১২ সালে সুনির্দিষ্ট রায় দিয়েছেন। উক্ত রায়ে পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি পাহাড়ে নির্মিত স্থাপনাসমূহ গুড়িয়ে দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন হাইকোর্টের সেই আদেশ বাস্তবায়ন করছে না।

বেলার নেটওয়ার্ক মেম্বার ও সিনিয়র সাংবাদিক আলীউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শফিক হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক জামিল মোহাম্মদ খান, চসিকের সহকারী নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ নুর উদ্দিন।

এছাড়াও ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের ডেপুটি এসিসট্যান্ট ডাইরেক্টর নিউটন দাশ, পরিবেশ সংগঠন গ্রিন ফিংগ্রাস এর সহকারী প্রতিষ্ঠাতা আবু সুফিয়ান ও রিতু পারভীন, বেলার বারীশ হাসান চৌধুরি, ফিরোজুল ইসলাম, জিয়াউর রহমান কল্লোল প্রমুখ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।