অপরাধ ও দুর্ঘটনা রোধে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বসছে দেড় হাজার সিসি ক্যামেরা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪৯০টি স্থানে বসানো হচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির ১ হাজার ৪৬০টি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। মহাসড়কের ২৬৫ কিলোমিটারের মধ্যে চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি রোধসহ যানবাহনের বেপরোয়া গতি নজরদারিতে এসব ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। ইতোমধ্যে মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় ক্যামেরা বসাতে খুঁটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্যের প্রায় ৯৫ শতাংশ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে পরিবহন করা হয়। বাকি ৫ শতাংশ রেলপথ ও নৌপথে আনা-নেওয়া করা হয়। কিন্তু ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানিপণ্য নেওয়ার সময় প্রায়ই চুরির ঘটনার অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিকরা। রয়েছে ডাকাতি-ছিনতাইয়ের অভিযোগও। এছাড়া মহাসড়কে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটে। এসব রোধ করার জন্য ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সীতাকুণ্ডের কুমিরা, সোনাইছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য খুঁটি তৈরির কাজ করছেন শ্রমিকরা। এ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পিকআপচালক মো. রুবেল বলেন, যন্ত্রপাতি ও শ্রমিকদের নিয়ে আধা কিলোমিটার পরপর ক্যামেরার খুঁটি বসানো হচ্ছে। খুঁটি বসানো শেষ হলে ক্যামেরা লাগানো হবে।

মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা লাগানোর এ প্রকল্প বাস্তবায়নে হাইওয়ে পুলিশ জানায়, মহাসড়কে ক্যামেরা বসাতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ এবং ডেটা প্রবাহের জন্য বিটিসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।

হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক ও প্রকল্প পরিচালক বরকত উল্লাহ খান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪৯০টি স্থানে মোট ১ হাজার ৪৬০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হবে।

কাজটি শেষ হলে পুরো মহাসড়ক ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে থাকবে। এটি বাংলাদেশে প্রথম ও পরীক্ষামূলক প্রকল্প। সিসি ক্যামেরা বসানোর ফলে রিয়েল টাইম মনিটরিং করা যাবে। আইন লক্সঘনকারী গাড়ি দ্রুত শনাক্ত করা যাবে। শনাক্ত করা যাবে নম্বর প্লেট, গতিপথ, সন্দেহজনক অনুপ্রবেশ, বেপরোয়া গতিসহ নানা কর্মকাণ্ড। ক্যামেরাগুলোর মধ্যে আছে লং ভিশন ক্যামেরা, পিটিজেড ডোম ক্যামেরা, চেকপয়েন্ট ক্যামেরা ও বুলেট ক্যামেরা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের প্রকল্প পরিচালক শরীফ সারোয়ার বলেন, হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের অধীনে মহাসড়কে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। মনিটরিং সেন্টারে হাইওয়ে পুলিশের একটি দল কাজ করবে। মহাসড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলোর কোনো গাড়ি অতিরিক্ত গতিতে চললে বা দুর্ঘটনা ঘটালে মনিটরিং সেন্টারে অ্যালার্ম (সংকেত) বেজে উঠবে। এরপর মাঠে থাকা হাইওয়ে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে। এর মাধ্যমে গাড়ি ও চালককে শনাক্ত করা যাবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।