আবারও পলোগ্রাউন্ড মাঠ মেলার দখলে, এবার উইমেন চেম্বার

‘খেলার মাঠে মেলা নয়’ এ স্লোগানে আশার আলো দেখেছিল চট্টগ্রামের ক্রীড়াপ্রেমিরা। পুরো জেলার ১৯১টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে একটি করে মাঠ তৈরির পরিকল্পনার পাশাপাশি যতগুলো মাঠ আছে সবগুলো সংস্কার করে সারা বছর মাঠে খেলাধুলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
এরই অংশ হিসেবে নগরীর আউটার স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজে হাত দেয় ক্রীড়া সংস্থা। সেটি চলমান আছে এবং আউটার স্টেডিয়াম সবুজ ঘাসে ঢেকে দেওয়া হয়েছে, চলছে পরিচর্যাও।

এরই মাঝে পলোগ্রাউন্ড মাঠে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত একমাস ব্যাপী মেলা করেছে চট্টগ্রাম চেম্বার। নামে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হলেও মেলা থেকে ব্যবসায়ীদের কী লাভ কিংবা ‘ওভারঅল টার্নওভার’ কত সেটি চেম্বার জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নে ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন জায়গার বসবাসকারী বিদেশীদের তৈরি পণ্যকে বিদেশী পণ্য বলে চালিয়ে দেয়া সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলেছিলেন চট্টগ্রামের প্রবীণ সাংবাদিকরা।
পলোগ্রাউন্ড মাঠ মাসব্যাপী মেলার দখলে থাকলেও মেলার স্টল প্রস্তুত করতে আরও কমপক্ষে ১৫ দিন আগে মাঠে কাজ শুরু করতে হয়ে। আর ইট, বাঁশসহ অন্যান্য সরঞ্জাম সরাতে মেলার পর আরও প্রায় ১৫ দিন সময় লাগে। সে হিসেবে আগে-পরে প্রায় দুই মাস খেলার অনুপযোগী থাকে।

এতদিন বাওয়া স্কুল মাঠ কিংবা আমবাগানের শহীদ শাহজাহান মাঠে মেলা করলেও চট্টগ্রাম চেম্বার থেকে প্রেরণা নিয়ে কিংবা প্রতিযোগীতা দিয়ে এবার পলোগ্রাউন্ডেই মেলার আয়োজন করলো চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার। শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে মাসব্যাপী এই মেলা উদ্বোধন হবে বলে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

এভাবে দীর্ঘ সময় নগরীর বড় মাঠটি মেলার দখলে যাওয়া প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, শিশুকিশোরদের সুষ্ঠু মনন গঠনে খেলাধুলার ওপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আমরা নতুন মাঠ তৈরি এবং হারিয়ে যাওয়া মাঠ উদ্ধারে বদ্ধপরিকর। কিন্তু পলোগ্রাউন্ডের মালিকানা বাংলাদেশ রেলওয়ের। জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন হলে মেলার সুযোগ দেয়া হতো না। বিষয়টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, পলোগ্রাউন্ড মাঠটি খেলাধুলার জন্য ডেডিকেটেড সম্পত্তি। রেলওয়ে পরিবারের সদস্যরা খেলবে, আশপাশের প্রতিবেশী খেলবে। কিন্তু দীর্ঘদিন এই মাঠটি দখলে নেয়ার পাঁয়তারা চলছে। তারই অংশ হিসেবে বছরের একটা উল্লেখযোগ্য সময় এই মাঠকে খেলার অনুপযুক্ত করে রাখা হয়। রেলওয়ের কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তার ইচ্ছা এই মাঠ মেলার জন্য দেয়া হলেও রেলের পুরো ম্যানেজমেন্ট এই মেলার বিপক্ষে রয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, অতীত থেকে মেলা হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা অনুমতি দিয়েছি। স্থায়ী ভেন্যু যেহেতু হয়নি, ভেন্যু হওয়া পর্যন্ত চেম্বারের মেলার সুযোগ তো দিতে হবে।

খেলাধুলা প্রসঙ্গে জিএম নাজমুল বলেন, আমাদের শাহজাহান মাঠসহ আরও মাঠ আছে। খেলাধুলায় সমস্যা হবে না।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী বলেন, যতদিন স্থায়ী ভেন্যু হচ্ছে না ততদিন এভাবেই মেলা করতে। আমরা সরকারের কাছে মেলার জন্য স্থায়ী ভেন্যুর দাবী জানাই।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।