আমিষে অবদানের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণেও সরস নাহার এগ্রো!

দেশের আমিষের চাহিদায় চট্টগ্রাম ভিত্তিক এগ্রো শিল্প প্রতিষ্ঠান নাহার এগ্রোর যোগানটা বেশ বড়। তিনটি গরু নিয়ে ১৯৮৯ সালে পারিবারিক খামারের মাধ্যমে পথ চলা শুরু হওয়া এই প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালে দেশের উদ্যোক্তাদের কাছে মডেল প্রতিষ্ঠান।

বিপরীতে নাহার এগ্রোর বিরুদ্ধে পরিবেশ দূষণের অভিযোগ বেশ পুরানো হলেও তার ভয়াবহতা পাওয়া গেছে সরেজমিনে। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম অলিনগরে তাদের কারখানায় গিয়ে দেখা যায় কর্মচারীরা পোল্ট্রি বর্জ্য সরাসরি ফেলছে হোনাইয়ার ছড়ায় (ভিডিও)

স্থানীয়দের সাথে আলাপে জানা যায়, নাহার এগ্রোর কর্মচারীরা প্রতিদিনই পোলট্রি বর্জ্য ছড়ার ফেলে। ছড়ার পানি আশপাশের মানুষ আগে রান্না-বান্না থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সবা কাজেই ব্যবহার করতো। কিন্তু নাহার এগ্রোর কারখানা স্থাপনের পর কারখানার বর্জ্যে পানি আর ব্যবহার করা যায় না।

স্থানীয় বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, হোনাইয়ার ছড়ার পানি আমরা খেতাম। এখন এই ছড়ার পানি গরুও খায় না। পানিতে নাহার এগ্রোর নিয়মিত বর্জ্য ছাড়াও মরা মুরগি ফেলে। আবার যেসব ডিম থেকে বাচ্চা হয় না, নষ্ট ডিমগুলোও তারা ছড়ার ফেলে। গন্ধে এলাকায় থাকাও তখন কষ্ট হয়ে যায়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, হোনাইয়ার ছড়ায় নাহার এগ্রোর বর্জ্য দূষণ সৃষ্টি করা অভিযোগ অনেক পুরোনো। তাদের বর্জ্যের গন্ধে আমার এলাকার মানুষ বসবাস করতে কষ্ট হয়। বিষয়টি আমরাও নাহার এগ্রো কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা এলাকা দূষণমুক্ত রাখার কমিটমেন্ট দিয়েও তা রাখছে না।

আমিষে অবদানের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণেও সরস নাহার এগ্রো! 1

মিরসরাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুর রহমান বলেন, পরিবেশ দূষণ করে জনগণের দূর্ভোগ তৈরির সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না। আমরা দ্রুত পরিবেশ রক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

নাহার এগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রকিবুর রহমান টুটুল বলেন, আমাদের বিজ্ঞানসম্মত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা রয়েছে। তবুও কর্মচারীরা কেন ছড়ার ফেলছে জানি না। আমি খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

প্রসঙ্গত, নাহার এগ্রোর বর্জ্য হোনাইয়ার ছড়ার হয়ে করেরহাট ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ফেনী নদীতে পড়েছে। ফেনী নদীকে ঘিরে রয়েছে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ধান ও মাছ চাষ। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এই বর্জ্য ছড়া-খাল হয়ে পানিতে মিশে। যারা এই পানি চাষাবাদসহ নানান কাজে ব্যবহার করেন তাদের শরীরে মারাত্মক রোগব্যাধী ছড়ানোর আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।