আলোচিত ‘কোপাইলি ক্যান’—রেকর্ড শোনেননি মিতুর বাবা

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তার পিতা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেনকে জেরা করছেন বাবুলের আইনজীবীরা। জেরায় তিনি আলোচিত ‘কোপাইলি ক্যান’ রেকর্ডটি নিজে না শোনার কথা জানান আদালতে।

সোমবার (৮ মে) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে মিতু হত্যা মামলার জেরা শুরু হয়েছে। এর আগে ২ মে সাক্ষ্য শেষ হওয়ার পর তাকে জেরা শুরু করেছিলেন আইনজীবীরা। জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় আদালত আগামী বুধবার (১০ মে) পর্যন্ত কার্যক্রম মূলতবি করেছেন।

আসামীপক্ষের আইনজীবীরা ভারতীয় নাগরিক গায়ত্রির সাথে পরকিয়া, এসআই আকরামের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে মোশাররফকে জেরা করেন। সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা অনেক বিষয় ‘স্মরণে নেই’ জবাব দিয়ে ‘কৌশলে’ এড়িয়ে গেছেন বলে জানান আইনজীবীরা।

তবে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন—পিবিআইয়ের দাবি করা ‘কোপাইলি ক্যান’ রেকর্ডটা স্বয়ং মোশাররফ হোসেন নিজেও শুনেছেন কিনা জেরাতে আইনজীবীরা জানতে চাইলে জবাবে মোশাররফ জানান তিনি শোনেননি।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বের হওয়ার পর চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে। ঘটনার পর তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
তবে বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ মিতু হত্যার প্রথম দিকে বাবুলকে ‘ফেরেশতা’ উল্লেখ করে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিলেও এক পর্যায়ে এই হত্যার জন্য বাবুলকে দায়ী করেন।

শুরু থেকে চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মামলাটির তদন্ত করে। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার পিবিআইকে দেয়। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পিবিআই সাতজনকে আসামি করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। ১০ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
অভিযোগপত্রে প্রধান আসামি করা হয়েছে মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারকে। অপর অভিযুক্তরা হলো—আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান মিয়া ও মোতালেব মিয়া প্রকাশ ওয়াসিম, এহতেশামুল হক ভোলা এবং কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা ও খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু। মুসা ও কালু মিতু হত্যার পর থেকে উধাও। তাদের কোনো হদিশ করতে পারেনি পিবিআই কিংবা পুলিশের কোনো বিভাগ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।