ঋণ খেলাপি ইলিয়াছ ব্রাদার্সের দুই পরিচালকের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা

চট্টগ্রামের বনেদি ব্যবসায়িক পরিবার আর বর্তমানের দেশের শীর্ষ ঋণ খেলাপি ইলিয়াছ ব্রাদার্সের দুই পরিচালক আমিনুল করিম ও নুরুল আবছারের দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন চট্টগ্রাম অর্থ ঋণ আদালত। ঢাকা ব্যাংকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন বলে চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ঢাকা ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার দায়ের করা মামলায় আমিনুল করিম ও নুরুল আবছারের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। মাননীয় আদালত তা মঞ্জুর করে আগামী ১৮ মে পাসপোর্ট নিয়ে আদালতে হাজিরের নিদের্শ দিয়েছেন।

ঋণ খেলাপি আমিনুল করিম ও নুরুল আবছার সহোদর। আমিনুল করিম ২৬৯, খাতুনগঞ্জ ঠিকানার মেসার্স এ.কে এন্টারপ্রাইজের মালিক। তিনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তার ভাই নুরুল আবছার সেই ঋণের জামিনদার ছিলেন। ব্যাংকের সেই ঋণ সুদ—আসলে ১০ কোটি ১৯ লাখ ৬১ হাজার ৭৫৬ দশমিক ৫৬ টাকা। ঋণের বিপরীতে উপযুক্ত কোন সম্পত্তি বন্ধক নেই বলেও ব্যাংক আদালতকে জানায়।

জাতীয় সংসদের অর্থমন্ত্রী ঋণ খেলাপিদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তার শীর্ষে রয়েছে চট্টগ্রাম ভিত্তিক ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী গ্রুপ ইলিয়াছ ব্রাদার্স। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে প্রায় হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮০১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির কাছে শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকেরই খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৮০ কোটি টাকা। এবি ব্যাংকের ঋণ রয়েছে ৬১ কোটি ৯৯ লাখ, ব্যাংক এশিয়ার ৩৬ কোটি ৮৩ লাখ, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৭১ কোটি ৮০ লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৪২ কোটি ৭০ লাখ, ওয়ান ব্যাংকের ২৮ কোটি ৫৪ লাখ, পূবালী ব্যাংকের ছয় কোটি ১৯ লাখ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ২২ কোটি ৪৩ লাখ ও দ্য সিটি ব্যাংকের ৫৬ কোটি টাকা।

মাত্র কয়েক বছর আগেও ভোজ্যতেলের বাজারে দেশের মোট আমদানির ১৮ শতাংশ তেল এককভাবে আমদানি করতো এমইবি গ্রুপের দাদা ব্র্যান্ড। এমইবি ও মোস্তফা গ্রুপ কারখানা সচল রাখতে বছরে সামান্য পরিমাণে ভোজ্যতেল আমদানি করছে, বাজার অংশীদারির হিসাবে তা এক শতাংশেরও কম। ধারাবাহিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও ঋণ ব্যবহারের অদক্ষতায় এখন দেশের শীর্ষ ঋণ খেলাপি। র মধ্যে প্রথম ইলিয়াছ ব্রাদার্স।

খেলাপি ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালতে ইলিয়াছ ব্রাদার্সের নামে ২০১৩ সালে মামলা করে এনসিসি ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এবি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ওয়ান ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকসহ একাধিক ব্যাংক হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইনে অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।