এবার জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক

চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরে অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্ধারকরা প্রায় তিন হাজার ১০০ একর জমি, এলাকার পরিবেশ, প্রতিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র পাহাড় রক্ষার্থে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভা অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিবুল হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে আমরা তথ্য জেনেছি। সভায় প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস উপস্থিত থাকবেন। এতে জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ এর সিনিয়র সচিব সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও গ্রাম রক্ষা বাহিনী এর প্রধানগণ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

এছাড়াও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম. রেজাউল করিম ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান আরও বলেন, আমরা জঙ্গল সলিমপুর এলাকার বেহাত হয়ে যাওয়া প্রায় ৩১০০ একর খাস জমি উদ্ধার করেছি। বেহাত হওয়া খাস জমি ভূমিদস্যুরা সাধারণ মানুষের কাছে প্লট অনুযায়ী দখলস্বত্ব বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি মামলা করা হয়েছে এবং কয়েকজন কারাগারেও আছেন।

তিনি আরও বলেন, জঙ্গল সলিমপুরের উদ্ধারকৃত ৩১০০ একর খাস জমির বিষয়টি সরকারের নজরে আসে। সেজন্যই পাহাড় ও বন রক্ষা করে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য আনয়ন ও জীববৈচিত্র রক্ষার্থে পুনরায় কিভাবে জঙ্গল সলিমপুর এলাকাটিকে সবুজায়নের মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায় তার নিমিত্তে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এই বৈঠক। এ মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যেমে জঙ্গল সলিমপুর এলাকার অন্ধকার যুগের অবসান ঘটবে।

ল্লেখ্য, জঙ্গল ছলিমপুর ছিল এক সময়ে দাগী সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র। নিজেদের আশ্রয়কে নিরাপদ করতে পাহাড় কেটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা জলবায়ু উদ্বাস্তুদের কাছে কম দামে সরকারি জমির দখল বিক্রি করতো সন্ত্রাসীরা। আর নগরীর অসংখ্য বস্তীর নেতারা সেখানে বিভিন্ন সমিতির নামে করেছেন পাহাড় উচ্ছেদ। সব কিছু জেনেও চট্টগ্রামের প্রশাসন ছিল নীরব দর্শক।

বর্তমান জেলা প্রশাসন নগর থেকে কারাগারসহ বিভিন্ন দফতর স্থানান্তরের পাশাপাশি বিশ্বমানের একটি হাসপাতাল, আইকনিক মসজিদ, বেতার ভবন, জাতীয় তথ্য কেন্দ্র, নভোথিয়েটার, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। পুরো পরিকল্পনায় ইকো সিস্টেম রক্ষাকেই প্রাধ্যন্য দেওয়া হচ্ছে। থাকছে প্রাণ প্রকৃতির অভয়ারণ্য ইকোপার্কও।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।