কর্ণফুলীতে জমিদার বাড়ির ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নে অন্যতম উৎসব মিয়ার হাটের মিয়ার মেলা। কালের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছিল ২০০ বছরের বড়উঠানের জমিদার আন্নর আলী খার বৈশাখী মেলা। ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছরের মতো এবারও দুই দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে বড়উঠান মিয়ার হাটে। আগামীকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) শুরু হওয়া দুই দিনের এ মেলা ঘিরে এলাকায় দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ।

মেলার ঐতিহ্য অনুযায়ী এ এলাকার পরিবারগুলোর যার যেখানে আত্মীয়স্বজন রয়েছেন, সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হয়। বিবাহিত মেয়েরা স্বামী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে বেড়াতে আসেন বাবার বাড়ি। যারা ঢাকাসহ দূরদূরান্তে চাকরি–বাকরি করেন, তারাও ছুটি নিয়ে এ সময় চলে আসেন নিজ গ্রামে। ঘরে ঘরে ভাজা হয় মুড়ি, মুড়কি, বিন্নি ধানের খই। ফলে বড়উঠান ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকার প্রতিটি বাড়িতে চলে আত্মীয়স্বজনে ভরপুর।

মেলায় সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জমিদার আন্নর আলী খার বংশধর সাজ্জাদ আলী খান মিঠু। তিনি জানান, আবহমান বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দুইদিন ব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরুটি শুরু হয় বৈশাখের ৮ তারিখ। করোনার থাবায় চার বছর মেলাটি উদযাপন না করতে পারায় এবার প্রাচীন ঐতিহ্য জমিদার আন্নর আলী খার এ বৈশাখী মেলা ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশীয় সাংস্কৃতির নানা আয়োজন করা হয়েছে। এতে সকলে আমন্ত্রিত।

মেলা পরিচালনা কমিটির প্রধান ও কর্ণফুলী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ খান আরজু বলেন, আবহমানকাল থেকেই নিবিড়ভাবে মেলাটি উদযাপন করা হয়। গ্রাম বাংলার যতগুলো পুরনো ঐতিহ্য টিকে রয়েছে তার মধ্যে বৈশাখী মেলা ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের মেলায় আগ্রতদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা হবে এবং পেনশন স্কিমে সরাসরি রেজিস্ট্রেশন ও অর্থ জমাদানের জন্যও থাকবে বুথ। এছাড়াও বিনামূল্যে ব্লাডও নির্ণয় করতে পারবেন আগত দর্শনার্থীরা। বড়উঠানের এই ঐতিহ্যের মেলা যেন খুবই শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়। এজন্য প্রশাসন সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার মো. সেলিম উদ্দিন বলেন, ছোটকাল থেকেই এ মেলা দেখে আসছি। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে অনেক মজা করতাম। করোনার কারণে কয়েক বছর মেলা উদযাপন হয়নি। এবার অনেক মজা করবো। দূর-দূরান্ত বন্ধুদের মেলা উপভোগ করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।