কাঁপানো শীতে মধুবৃক্ষের মিষ্টি রস!

পৌষের শীতে কাঁপছে পুরো দেশ। লাগাতার শৈত্যপ্রবাহ বাড়িয়েছে শীতের মাত্রা। শহর কিংবা গ্রাম কোথাও কম নেই শীতের তীব্রতা। শীতের সাথে সাথে বেড়েছে খেজুর রসের মিষ্টতাও। গ্রামে গ্রামে এখন ভোর হলেই ব্যস্ততা চলছে খেজুরের রস নিয়ে। একদিকে চলে গাছ থেকে খেজুরের রস নামানোর ব্যস্ততা অন্যদিকে বাড়িতে বাড়িতে চলে রস থেকে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। এছাড়া রসের সাথে হরেক রকমের শীতের পিঠা ভোজন এখন গ্রাম বাংলার প্রত্যেকটা ঘরের নিয়মিত চিত্র।

দেশের অন্যসব গ্রামের মতো একই চিত্র চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়াও। এই উপজেলা কিছুটা পাহাড় ঘেঁষা হওয়ায় কিছুটা বেশিই কুয়াশা নজরে পড়ে। তবে কুয়াশামাখা ভোরেও খেজুরের রস নিয়ে দিন শুরু করেন এই অঞ্চলের মানুষ। গাছ থেকে রস নামানো, তা বিক্রি বা গুড় তৈরিতে সময় যাচ্ছে এখানকার কৃষাণ-কৃষাণীদের।

জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় শীতের মৌসুমে খেজুরের রসের বেশ চাহিদা রয়েছে। এখানে রসের চাহিদা বেশি হওয়ায় গুড় তৈরি একটু কম। বিশেষ করে উপজেলার সরফভাটা মীরেরখীল, পদুয়া, বেতাগী, ইসলামপুর, কোদালা, শিলক, নিশ্চিন্তাপুর পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় শীতের এ সময়ে খেজুর রস পাওয়া যায়। তবে অন্যান্য ইউনিয়নে খেজুর গাছ তেমন না থাকায় রসের চাহিদা এ সময় বেশি থাকে।

মীরেরখীলের স্থানীয় গাছি আবুল হাসেম বলেন, বাংলা মাঘ মাসের শুরু থেকে দীর্ঘ একমাস সময়ে শীত বেশি হওয়ায় এ সময়ে মিষ্টি খেজুর রস পাওয়া যায়। এ সময় স্থানীয়দের রস অর্ডার বেশি থাকে, কিন্তু গাছ কম থাকায় স্থানীয়দের চাহিদা মিটাতে অনেক সময় হিমশিমে পড়তে হয়। প্রতি লিটার খেজুর রসের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা করে স্থানেরদের কাছে বিক্রি করি।

রফিক নামে আরেক কুষক বলেন, এখন খেজুর গাছ অনেকটাই বিলুপ্তি পথে আমাদের প্রয়োজন কিছু গাছ রোপণ করা। না হয় এক সময়ে বাঙালিদের ঐতিহ্য খেজুর রস বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আমার কাছে মোট ৪০টি গাছ রয়েছে পালা বদল করে সপ্তাহে ২০টি কাটলে অন্য ২০টি অন্য সপ্তাহে কাটতে হয়,প্রতিটি গাছ থেকে এক লিটার বা দেড় লিটার করে রস পাওয়া যায়। ২০টি গাছ কাটতে বেশ সময়ের প্রয়োজন হয়, কারণ প্রতিটি গাছ বেশ দূরত্বে অবস্থান। বিকাল ৩টা থেকে গাছ কাটা শুরু করে সন্ধ্যা হয় যাই। এখন মাটির হাড়ির পরিবর্তে প্লাস্টিকের পট দেওয়ার করা হয়। পরের দিন সকাল ৬টার দিকে প্রতিটি গাছ থেকে রস সহ প্লাস্টিকের পটগুলো সংগ্রহ করতে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।