গুমাই বিলে চলছে সোনালি ধান কাটার উৎসব

খুব ভোর। দু এক ফোঁটা কুয়াশা গাছের পত্র পল্লব বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে মাটিতে। চারদিক খানিকটা ধোঁয়াশা। এর মাঝে হেঁটে যাচ্ছেন একদল কৃষক। কিছুক্ষণ পর শুরু হয় ব্যস্ততা। হেমন্তের সায়াহ্নে কুয়াশায় মোড়ানো বিস্তীর্ণ মাঠে ভিড় জমিয়েছেন কৃষকের দল। কেউবা পাকা দানের গোছায় পোঁচ দিচ্ছেন, আবার কেউবা ব্যস্ত আটি বেঁধে ধান বহনে। এ যেন এক মহোৎসব। বলছিলাম বাংলাদেশের শস্যভাণ্ডার খ্যাত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া গুমাই বিলে সোনালি আমন ধান ঘরে তোলার উৎসবের কথা।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) উপজেলার গুমাই বিলে দেখা গেছে কৃষকদের ব্যস্ততার চিত্র। আমনের এই মৌসুমে আশানুরূপ ফলন হওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে দেখা গিয়েছে তৃপ্তির হাসি।

সরজমিনে দেখা যায়, গুমাই বিলের সারি সারি ধানক্ষেতের দেখা মিলল সোনালি ধানে ভরে গেছে মাঠ। হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে ধানের ছড়া। টিয়েসহ নানা জাতের পাখিরা ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়াচ্ছে মাঠে। কৃষকদের কেউ ধান কেটে ঘরে আনছেন, কেউ কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যাওয়ার পথে অনেকেই গাড়ি থেকে নেমে ছবি তুলছেন। নতুন ধান ঘরে তুলতে আগাম জাতের আমনের পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া ভাল থাকায় পাকা ধান কেটে জমিতে শুকানো হচ্ছে। বসে নেই কৃষাণীরাও। তাদের ব্যস্ততা ধান মাড়াই ও গোলায় উঠানো নিয়ে।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, গুমাইবিলে বন্যার কারণে কিছু আমন ধান পাকতে একটু দেরি হলেও বেশিরভাগ আমন পাকছে। বন্যার কারণে গুমাই বিলে কিছু অংশ বিপর্যয় হয়েছে। দ্বিতীয়বার আমন রোপন করায় সেই আমন পাকতে সময় নিচ্ছে। রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভাতে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ বছর রাঙ্গুনিয়ায় ১৫ হাজার ৪শ ৪৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

গুমাই বিলে চলছে সোনালি ধান কাটার উৎসব 1

তিনি আরও জানান রাঙ্গুনিয়া বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভাতে মাঠ থেকে এখন চোখ ফেরানো যায় না। এবার আমন ফসল বন্যার কারণে ঝুঁকিতে ছিল, কিন্তু আমাদের পরামর্শের সেই ঝুঁকি কাটিয়ে ভালো ফসল হয়েছে। আবার সঠিক সময়ে বৃষ্টি হয়েছে। এতে করে ফসলও ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে আগাম জাতের কিছু ধান কাটা হয়েছে। তবে সব ধান পাকতে আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। সেই আশাতেই দিন গুনছেন কৃষক।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।