চট্টগ্রামের ডিসি ফখরুজ্জামানের পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আর্ন্ডট কর্ডেন ডিপার্টমেন্ট অফ ইকোনমিকস থেকে অর্থনীতিতে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করলেন।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্টক পিয়ারসালের পাঠানো এক অভিনন্দন বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
২৪ তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফখরুজ্জামানের থিসিসের বিষয় ছিল—‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল আপগ্রেডিং ইন দ্য অ্যাপারেল ভ্যালু চেইন: এভিডেন্স ফ্রম বাংলাদেশ’।

ডিসি ফখরুজ্জামান চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, প্রায় ৫ বছর সাধনার পর কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেয়েছি। এ গবেষণায় বহু বিনিদ্র রজনী পার করেছি। আজকের অর্জনের ভালো লাগা বলে বোঝানো যাবে না।
চাকরির পাশাপাশি গবেষণা চালিয়ে যাওয়া তো একটা চ্যালেঞ্জ আছেই। আর কী কী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন জানতে চাইলে ডিসি বলেন—প্রথমত সেশনটা ছিল বৈশ্বিক মহামারী কোভিডে। কোভিডের কারণে অনেকগুলো প্রোগ্রামিং আমাকে শিখতে হয়েছে। কোভিড না হলে হয়তো কারো সহযোগিতা পেতাম। কিন্তু কারো সহযোগিতা নেওয়ার মতো অবস্থা ছিল না। নিজের সব কিছুই নিজেকে করতে হয়েছে।
দ্বিতীয়ত—শিক্ষা ও গবেষণা কাজে অস্ট্রেলিয়ার একটা নীতি আছে। সেটি হলো জ্ঞানের রাজ্যে নতুন জ্ঞান যুক্ত করতে হবে নয়তো চলমান যে কোনো জ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে। এদুটোর কোনোটা না হলে অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত ডিগ্রির অনুমোদন দেয় না।

গবেষণা চলাকালে আপনি কোনো অনিশ্চয়তায় পড়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কনফার্মেশন লেটার পাওয়ার আগ পর্যন্তই অনিশ্চয়তায় ছিলাম। তিনজন সুপারভাইজর, এক্সটার্নালগণ যদি থিসিসে সন্তুষ্ট না হন আমার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন হবে না। গত পাঁচ বছর কত পরিশ্রম করেছি সেটাতো আমিই কেবল জানি। এমনও হয়েছে—পেপার জমা দিয়েছি, প্রফেসরগণ বললেন—এভাবে নয় এভাবে করো। নির্দেশনা অনুযায়ী করলাম। আবার নতুন করে নির্দেশনা দিলেন। এভাবে সময়, শ্রম যা দিয়েছি, যত অনিশ্চয়তা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের এক অভিনন্দন বার্তায় সব আনন্দে পরিণত হলো।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিন বছর অস্ট্রেলিয়াতে সরাসরি গবেষণার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় দেশে ফিরে চাকুরিতে যোগদান করে গবেষণার বাকি অংশ শেষ করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি একজন পরিশ্রমী ও অধ্যবসায়ী মানুষ হিসেবে তিনি মাঠপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে সৃজনশীলতার সাথে চৌকসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন মহলের অভিনন্দন ও প্রশংসায় ভাসছেন জেলা প্রশাসক। একজন যোগ্য ও দক্ষ জেলা প্রশাসক হিসেবে ইতিমধ্যেই সর্বসাধারণের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।

মানবিক জেলা প্রশাসক ফখরুজ্জামান চট্টগ্রামে হাজার একর খাসজমি উদ্ধার,পর্যটনখাতের উন্নয়ন,চট্টগ্রামকে স্মার্ট জেলার রুপান্তরকরণে পুরস্কারপ্রাপ্তিসহ বিভিন্ন উদ্যোগ,শিক্ষা ব্যাবস্থার অগ্রগতি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাসহ চট্টগ্রামের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন। একজন সৃজনশীল জেলা প্রশাসক হিসেবে তিনি চট্টগ্রাম জেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করছেন।

চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ জেলা প্রশাসক সম্পর্কে বলেন, বর্তমান জেলা প্রশাসক অত্যন্ত মেধাবী, চৌকস,সাহসী ও মানবিক জেলা প্রশাসক। তিনি চট্টগ্রামের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। তার পিএইচডি অর্জনে গবেষণালব্ধ জ্ঞান মাঠপ্রশাসনসহ কেন্দ্রীয় প্রশাসনে নীতিনির্ধারণী ভূমিকা পালন করবে। আমরা তাঁর উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের পারিবারিক জীবনে রয়েছে সহধর্মীণি তানজিয়া রহমান ও দুই সন্তান।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।