চট্টগ্রামে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও সংসদ বাতিলের এক দফা দাবীতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি যৌথভাবে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচী—পতাকা মিছিলের আয়োজন করে। শনিবার (২৭ জানুয়ারী) বিকেলে কাজীর দেউরী নুর আহমদ সড়কে বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে প্রধান অতিথি ছিলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নজরুল ইসলাম খান।

নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে, হাতে কালো পতাকা নিয়ে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে লাভ লেইন, এনায়েত বাজার, জুবলী রোড় হয়ে তিন পুলের মাথায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মিছিল শেষ করে।

মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগে বলা হতো বিনা ভোটের সরকার। কারণ ৩শ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে কোনো প্রার্থী ছিল না। ২০১৮ সালে হলো নিশি রাতের নির্বাচন। কারণ রাত্রিবেলা ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছে। আর এবার সরকারকে সারা দুনিয়া বলছে, এটা ডামি সরকার। কেউ বলে, আমি, ডামি ও স্বামী। স্বামী বলে কেন বলে জানেন তো। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলছিল, আমাদের দেশের সাথে ভারতের সঙ্গে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। ডামি সরকার কী আসল সরকার হয়? এই সরকার টিকতে পারে না। এই সরকারের টিকা উচিত নয়। কারণ এই সরকারকে জনগণ ভোট দেয়নি। তাই আমি ডামি ও স্বামীর সংসদ বাতিল করতে হবে।

মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া ও ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই তথাকথিত নির্বাচনী খেলার আগে অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্তত ১৫শর বেশি নেতাকর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। অন্যায়ভাবে তাদেরকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, এটা নাকি কাকতালীয়। ওনারা ইচ্ছে করে করেন নাই। এতোদিন হয় না সাজা, ঠিক নির্বাচনের আগে দিয়ে রাতে পর্যন্ত আদালত বসিয়ে শত শত নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া হয়েছে। এটি কাকতালীয় মনে হয় আপনাদের? এটি আমাদেরকে ভয় দেখানোর জন্য করা হয়েছে। আমরা ভয় পাইনি। ওঠাতো ছোট জেল, এই সরকার গোটা বাংলাদেশকে কারাগার বানিয়ে রেখেছে। বিএনপির কোনো কর্মী ওই ছোট কারগারকে ভয় পায় না।

তিন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে জনগণের কোন মূল্য নেই। তাই তারা জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করছে না। নিজেদের আখের গোছানোর জন্য সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে জনগণকে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা। জনগণের কোন মূল্য আওয়ামী লীগের কাছে নেই, কারণ তারা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার দাবি যেন আদায় করতে না পারি তার জন্য আজকে মিথ্যা বানোয়াট একটি মামলায় আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ জানে, বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তার কাছে তাদের অন্যায় অত্যাচার টিকবে না। কারণ জিয়া পরিবারের জনপ্রিয়তাকে তারা ভয় পায়।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা বিএনপির সি. যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হালিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, নুরুল আমিন, আলহাজ্ব সালাউদ্দীন, নূর মোহাম্মদ, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, সরওয়ার আলমগীর, কাজী সালাউদ্দিন, কর্নেল আজিম উল্লাহ বাহার এবং চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।