চট্টগ্রাম কলেজে স্বাধীনতা স্মারক— যেন পুর্ণাঙ্গ ৭১

দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাসে অবশেষে নির্মাণ হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য আর ১৭ ফুট উচ্চতার ‘স্বাধীনতা স্মারক’-এ ১১ ফুট উচ্চতা ও ৮ ফুট প্রস্থে বঙ্গবন্ধুর ছবি স্থাপন করা হয়েছে।

মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী উপলক্ষে চট্টগ্রাম কলেজ শিক্ষক পরিষদ ও ছাত্রলীগের সমন্বিত সহযোগিতায় ইতোমধ্যে স্বাধীনতা স্মারকের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। শিক্ষা উপমন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীর শিডিউল পেলে যে কোন দিন উদ্বোধন করা হবে বলে জানা গেছে।

স্বাধীনতা স্মারকটি দৃশ্যত একটি বই। বইয়ের শুরুতে জগতের শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। এরপরই যুদ্ধ শুরুর দৃশ্য এবং যুদ্ধ।

অপর পাতার ভিত্তিমূলে রয়েছে ত্রিশ লক্ষ শহীদের লাশ ও দুই লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর করুণ দৃশ্য।

আর এই ঘটনা প্রবাহের মাঝেই আছে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। স্বাধীনতা স্মারকটি যেন পুর্ণাঙ্গ ৭১।

জানতে চাইলে শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. অজয় কুমার দত্ত চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী উপলক্ষে কলেজ ক্যাম্পাসে স্বাধীনতা স্মারক স্থাপন করতে পেরে চট্টগ্রাম কলেজ পরিবার গর্বিত। দীর্ঘদিন কলেজে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি সক্রিয় থাকায় এখানে স্বাধীনতা, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ চর্চা হতো না। আমরা শিক্ষক ও ছাত্রদের সমন্বিত উদ্যোগে এই স্থাপনা নির্মাণ করেছি। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহোদয়ের শিডিউল পেলে এটি উদ্বোধন করা হবে।

স্বাধীনতা স্মারকের শিল্পী ছিলেন চট্টগ্রামের স্বনাম ধন্য শিল্পী শ্রীকান্ত আচার্য্য। তিনি বলেন, স্বাধীনতা স্মারকে আমরা জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীনতার সুর্যোদয়ের ইতিহাস স্থাপন করেছি। পুরো স্থাপনা ৩০ ফুট বাই ১৭ ফুট। জাতির পিতার ম্যুরালের অংশটি টাইলস ম্যুরাল, বেইসও টাইলসের। দুই পাশের দুটো উইংয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, ‘১৯৮০ সালে ছাত্রলীগে নেতা তবারককে হত্যার মধ্যদিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের পাশাপাশি মহসিন কলেজেও শুরু হয় ধর্মান্ধদের আষ্ফালন। সেই থেকে এই দুই কলেজে প্রগতিশীল ছাত্র-শিক্ষকগণ কোনঠাসা হয়ে পড়েন। এখানে মুক্তিযুদ্ধ, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ, মুক্তবুদ্ধি চর্চার পরিবর্তে ধর্মীয় গোঁড়ামী ঝেঁকে বসে।’

‘এই দুই কলেজ শিবির মুক্ত হওয়ার পর থেকে এখানে মুক্তিযুদ্ধ, বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ চর্চা শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী উপলক্ষে শিক্ষকদের সাথে সমন্বয় করে আমরা স্বাধীনতা স্মারক স্থাপন করেছি। এর জন্য সরকারি কোন বরাদ্দ নেওয়া হয়নি। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের শিডিউল পেলেই আমরা এটি উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করবো।’

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।