চোরাই মাল পরিবহনের সহযোগী এসএ পরিবহন, হাতেনাতে ধরলো কাস্টমস গোয়েন্দারা

সারা দেশে পার্সেল-কুরিয়ার সার্ভিস এসএ পরিবহনের বিরুদ্ধে মাদক, চোরাই মাল পরিবহনের অভিযোগ পুরোনো। এর আগে এসএ পরিবহনের কাউন্টার থেকে কোটি টাকার ইয়াব উদ্ধার করেছিল র‌্যাব। এবার ৫১ কোটি ৯১ লাখ টাকার ফেব্রিক্স আটক করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রামের কর্মকর্তারা। এই চোরাচালানে ৮ দশমিক ৬ মেট্রিক টন নিট ফেব্রিক্স পাচার করা হচ্ছিল।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) কাস্টমসের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চট্টগ্রাম নগরীতে এসএ পরিবহনে প্রধান কার্যালয় কাজির দেউড়ি থেকেই চোরাই ফেব্রিক উদ্ধার করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চোরাকারবারিরা এসএ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করে পণ্যচালান পাচার করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে নজরদারি বাড়ানো হয়। এতে কাভার্ডভ্যান (ঢাকামেট্রো-ট-১১-৯১২১) আটক করা হয়। সিল খুলে কাভার্ডভ্যানের ভেতরে থাকা পণ্য ইনভেন্ট্রি করা হয়। এতে দেখা যায়, ৩৫৬টি প্যাকেজ (১২৮ টি বস্তা এবং ২২৮ টি রোল) সাদা, সানা প্রিন্ট, হলুদ, জলপাই, হালকা বেগুনিসহ আটটি ভিন্ন ভিন্ন রঙের ৮ হাজার ৬১২ দশমিক ৭৯ কেজি নিট ফেব্রিক্স পাওয়া যায়।

কাস্টমস গোয়েন্দারা এস পরিবহনের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা নয়-ছয় বুঝ দেন। চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জে যেখানে মাত্র ১৫ টাকা ভাড়ায় কাভার্ডভ্যান পাওয়া যায় সেখানে এসএ পরিবহন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ৫৫ হাজার টাকা ভাড়ায় পরিবহন করাটা প্রশ্ন বিদ্ধ ছিল।

গোয়েন্দারা ফেব্রিক আটক করতে গেলে এর মালিকানা দাবি করেন মো. নজরুল ইসলাম নামের একজন বিডার। পণ্যের গায়ে ২০২২ সালের আমদানি করা স্টিকার লাগানো থাকলেও নজরুলের উপস্থাপিত কাগজপত্র ছিল ২০২০ সালে আমদানি করা পণ্যের। মালিকানা দাবি করে নজরুলের প্রদর্শন করা কাগজপত্র ও কাস্টমসের কাগজপত্র দেখে মিল না পেয়ে পণ্য চালানটি জব্দ করে কাস্টমস গোয়েন্দা অধিদপ্তর।
এছাড়া আটককৃত পণ্যচালানের সঙ্গে মূল্য সংযোজন করের (মূসক) চালান পাওয়া যায়নি।

এসএ পরিবহনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা কাস্টমস গোয়েন্দা ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের মারমুখি আচরণ করে এবং তাদের প্রাণ নাশের হুমকি দেয় উল্লেখ করে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক উত্তম চাকমা বলেন, ‘এসএ পরিবহনে গাড়িতে করে চোরাচালানের সময় ৫১ কোটি ৯১ লাখ টাকার ফেব্রিক্স আটক করা হয়েছে। চোরাচালানে ৮ দশমিক ৬ মেট্রিক টন নিট ফেব্রিক্স পাচার করা হচ্ছিল এসএ পরিবহনের যোগসাজশে। চোরাচালানে এসএ পরিবহনও জড়িত। আমরা তা জব্দ করতে গেলে আমাদের প্রাণ নাশের চেষ্টা করা হয়। আমরা কোতোয়ালী থানায় একটি মামলাও করেছি।’

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।