জেলা পরিষদে নৌকার টিকিট পেলেন ফটিকছড়ির পেয়ারুল

'নেতাদের পরামর্শ নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর উন্নয়নে কাজ করব'

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এটিএম পেয়ারুল ইসলাম।

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবনে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের এক যৌথ সভায় তাকে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত হয়।

এটিএম পেয়ারুল ইসলাম চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আ.লীগ মনোনীত এটিএম পেয়ারুল ইসলামের জন্ম চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউপির কিপাইতনগর গ্রামে। মাধ্যমিকেই হয় রাজনীতির হাতেখড়ি। উপজেলার আহমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সময় স্কুল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন উত্তর চট্টগ্রামের রাজনীতির সুতিকাগার খ্যাত নাজিরহাট কলেজে।

১৯৭৯ সালে নির্বাচিত হন কলেজছাত্র-সংসদের সাধারণ সম্পাদক। একই বছরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন পেয়ারুল। এর পর ১৯৮১ সালে জায়গা পান ছাত্রলীগের জেলা কমিটিতে। সেবার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।

১৯৮৭ সালে কন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক হন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও ছিলেন প্রথম সারিতে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যে কয়জন নেতা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি।

১৯৯০ সালে মাত্র ৩০ বছর বয়সেই ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর প্রবেশ করেন আ’লীগের রাজনীতিতে। ১৯৯৩ সালে প্রথম বরের মত আ’লীগের ফটিকছড়ি উপজেলা কমিটিতে পদ পান পেয়ারুল ইসলাম। সেবার উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। এরপর চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় আ’লীগের উপ কমিটির সহ-সম্পাদক নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কাছে হেরে যান তিনি। এরপর দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের মনোনয়ন ঘোষণার বিষয়ে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, আমাকে সুযোগ দেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ, দলীয় নেতা কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা। আমার সাথে থাকায় চট্টগ্রামবাসীর প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। যারা মনোনয়ন চেয়েছিলেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। সারাজীবন ব্যক্তিস্বার্থের উর্ধ্বে উঠে রাজনীতি করেছি। ভবিষ্যতেও করব ইনশাআল্লাহ। চট্টগ্রামবাসীর দোয়া নিয়ে, চট্টগ্রামের নেতাদের পরামর্শ নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর উন্নয়নে প্রাণপণ চেষ্টা করবো করব।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে পেয়ারুল ইসলামের সাথে মনোনয়ন চেয়েছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলার মোট ১৭ নেতা। তারা হলেন- জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. মাঈনুদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি লায়ন শামসুল হক, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ইদ্রিস, রূপালী ব্যাংকের পরিচালক ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবু সুফিয়ান, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা মঞ্চের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুছ, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের সাবেক মহাসচিব আবুল হাশেম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাঈদ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ রবি, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মো. ওসমান গণি চৌধুরী।

২৩ আগস্ট দেশের ৬১ টি জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিলে ১৫ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র দাখের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন বাছাই ও ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী তিনদিন বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিলের সময় দেয়া হয়। আপিলের পরের দুইদিনে তা নিষ্পত্তি করা হবে। ২৫ সেপ্টেম্বর প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষদিন ও পরদিন ২৬ সেপ্টেম্বর প্রতীক বরাদ্দের দিন নির্ধারণ করেছে কমিশন। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৭ অক্টোবর।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।