নদভীকে ‘জয় বাংলা’ বলা শিখেয়েছি আমরা—ডা. মিনহাজ

নদভীকে ‘জয় বাংলা’ বলা শিখেয়েছি উল্লেখ করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজের রেডিওলজি ও নিউক্লিয়ার ইমেজিং বিভাগের অধ্যাপক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘২০১৪ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তাঁর সামরিক সচিব মরহুম মেজর জেনারেল আবেদীন সাহেব, আমি আর নদভী সাহেব ২৮ মিনিট বৈঠক করেছিলাম। সেদিন চট্টগ্রামের কোনো নেতা তার নির্বাচনী এজেন্ট হতে রাজী হননি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর কর্মী হিসেবে আমি আমি নদভীর নির্বাচনী এজেন্ট হই। নদভীকে জয় বাংলা বলা শিখিয়েছি আমরা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে মনোনয়ন দেওয়ার আগে তিনি জামায়াতের সঙ্গে ছিলেন। নৌকার টিকিট পাওয়ার পর তাকে বাঙ্গালীর মুক্তির স্লোগন—জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু শিখিয়েছি আমরা।
কিন্তু এমপি হওয়ার পর দলের নেতাকর্মীদের চেয়ে তার কাছে তার বউ, ভাতিজা, শ্যালকসহ জামায়াতের বিভিন্ন পদের লোকজন অগ্রাধিকার পায়। ওই পরিস্থিতিতে তার সঙ্গে থাকা সম্ভব ছিল না। আমি ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে এসছি, জামায়াতি পরিবারের লুটপাটের সহযোগী থাকতে পারিনি বলেই তাকে ছেড়ে আমি আমার নেতাকর্মীদের মাঝে ফিরে যাই। তিনি জামায়াত নিয়ে ছিলেন গত ১০টি বছর।

রোববার (২৪ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আওয়ামী লীগে ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে ডা. মিনহাজ। সাংসদ এমএ মোতালেব, সাতকানিয়া পৌর মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের, উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আঞ্জুমান আরা বেগমসহ সাতকানিয়া লোহাগাড়ার প্রায় সব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।

ডা. মিনহাজকে নদভী বদহজমী মানুষ বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ইউএসটিসিতে তিন বছর প্রভাষক ছিলাম। এরপর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএস করার জন্য চলে যাই চাকরি ছেড়ে। পড়াশোনা শেষ করে আবার এসে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিই রেজিস্ট্রার হিসেবে। আমি বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা রেজিস্ট্রার। এরপর সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দিই মা ও শিশু মেডিকেল কলেজে। সেখানে আমার প্রমোশন হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন জার্নালে আমার ৭০’র অধিক রিচার্স পেপার প্রকাশিত হয়েছে। আমি সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাই। এটা আমার ক্যারিয়ারের আপগ্রেডেশন। আর তিনি বলছেন আমি বদহজমি মানুষ। হ্যা আমি আদর্শহীনের জন্য বদহজমী। সাতকানিয়ায় তিনি মাদ্রাসার মাঠ দখল করে মার্কেট করতে চেয়েছেন, আমি দিই নাই। তিনি আমাকে রেখে লুটপাট করতে চেয়েছেন আমি সেই সুযোগ না দিয়ে নিজে সরে গেছি।

ডা. মিনহাজ আরও বলেন, নদভী সাহেব বলেছেন সাতকানিয়ায় এখন দশ এমপি, আমি বড় এমপি। আমি বলবো সাতকানিয়ার প্রতিটি নাগরিকই এমজন এমপি। সবাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি। শান্তি শৃঙ্খলার স্বার্থে আমরা সবাই এমপির ভূমিকা রাখবো। মোতালেব সাহেব আমাদের জনপ্রতিনিধি। তাঁর সাথে এলাকার কারো কোনো দেয়াল থাকবে না। সবাই দায়িত্ব নিয়ে সাতকানিয়া-লোহাগাড়াকে শান্তি, উন্নয়নের জনপদের পরিণত করবো। আপনারা দেখেছেন, এমএম মোতালেব এমপি হওয়ার দুই মাসের মাথায় সাতকানিয়ার অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয়েছে, ফসলী জমির টপসয়েল কাটা বন্ধ হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ গ্যাস বিক্রি বন্ধ হয়েছে।
সাতকানিয়া আদর্শ মহিলা কলেজ নিয়ে তিনি বলেন, আমি ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাতকানিয়া আদর্শ মহিলা কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ছিলাম। আমি যখন বিএমএ নির্বাচন নিয়ে শহরে ব্যস্ত তখন তিনি কলেজের অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেনের বাসায় গিয়ে জোরপূর্বক কিছু কাগজে স্বাক্ষর এনেছেন। অবৈধভাবে নুরুল আবছার সাহেবকে সভাপতি বানিয়েছেন। কোনো রকম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চারজন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। গত ২৩ জানুয়ারি আবার সভাপতি হওয়ার পর অবৈধ নিয়োগ পাওয়া সেই চার জনের চাকুরী চলে গেছে। আর আমাদের রক্ত মুজিবীয় রক্ত। আমি সভাপতি হওয়ার পর জামায়াত পুনর্বাসিত হওয়াটা কাল্পনীক গালগপ্প।

আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে চাই—সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আওয়ামী লীগের দূর্গ। এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশ চলবে। কোনো অনিয়ম, দূর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, লুটেরা থাকবে না। সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় বেকারত্ব থাকবে না। সাতকানিয়া-লোহাগাড়াকে আমরা একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেওয়ার মতো জনপদ পরিণত করবো।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।