ফটিকছড়িতে বেড়েছে সাপের উপদ্রব—উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিলছে বিনামূল্যে চিকিৎসা

চলতি বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাহাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে। প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে সাপের কামড়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিষাক্ত সাপের কামড়ের রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনামূলে মিলছে এর চিকিৎসা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জুন থেকে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীদের সেবাদান শুরু হয়। গত এক মাসে ১৬ জন রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৪ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি রয়েছেন।
এদেরই একজন মো.ইউসুফ (৫২)। যিনি গত মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকালে কৃষিজমিতে কাজ করতে গেলে সাপে কামড়ায়। পরে তাঁকে ভর্তি করানো হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বর্তমানে অনেকটা সুস্থ। তবে তাঁকে ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা।
এর আগে দিন রাতে হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছে ৩০ ও ১০ বছর বয়সী দুইজনকে। এছাড়াও মহিলা ওয়ার্ডেও ভর্তি রয়েছেন ৫০ বছর বয়সী এক মহিলা রোগী। তারা সবাই সুস্থ রয়েছেন এবং ২৪ ঘন্টার জন্য চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে দুইজন।

চিকিৎসকরা বলছেন, বিষাক্ত সাপের কামড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর মূল কারণ সচেতনতার অভাব। ওঝা বা কবিরাজ ও বেদের মাধ্যমে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে চিকিৎসা করা, রোগীকে হাসপাতালে আনতে দেরি করা এবং বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে চিকিৎসা না করানোর ফলে অনেক প্রাণ অকালে ঝরে যায়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম বলেন, ‘মাননীয় এমপি মহোদয় সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, ডাইরেক্টর ও সিভিল সার্জন স্যারের নির্দেশনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। গত ২২ জুন থেকে আমরা সাপে কাটা রোগী ভর্তি করছি। এর মধ্যে ১৬ জন রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বিষাক্ত সাপ কামড়ালে তার জন্য এন্টিভেনম প্রয়োগ ও এটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধ করার জন্য যা জিনিষগুলো প্রয়োজন তা আমাদের মজুত রয়েছে। বিষাক্ত সাপের কামড়ে কেউ আহত হলে তাকে যেনো দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সাপের কামড়ের এন্টিভেনম ইঞ্জেকশন রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সাপের কামড়ের অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত এবং আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে মানুষ ওঝা বা বৈদ্যর কাছে নিয়ে কেবলমাত্র সময় নষ্টই হয় না, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পরে। তাই কোন ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে না গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে বিনামূল্যে সেবা নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।’

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।