ফের সংঘর্ষে চবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষ, আহত ১৫

পূর্ব ঘটনার জের ধরে ফের সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপ। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে দুই উপগ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে বিবাদমান দুটি উপগ্রুপ হলো শাহজালাল হলে অবস্থানরত সিক্সটি নাইন ও সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থানরত বিজয়।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার বিজয় গ্রুপের অনুসারী ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের কামরুল ইসলামকে মারধর করে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা। এ ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরপর পরে গতকাল বুধবার রাতে সোহরাওয়ার্দী হল এলাকায় দিকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের এক কর্মী সাথে হাতাহাতি ঘটে কামরুলের। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর উভয় পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১১টায় প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশ নিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও দুই পক্ষের নেতা কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা কমেনি।

এ ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট কর্তৃক আয়োজিত ফাগুন সম্ভাষণ অনুষ্ঠানে বিজয় গ্রুপের কয়েকজন নেতাকর্মীকে মারধর করেন সিক্সটি নাইনের কর্মীরা। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরপরেই উভয় পক্ষের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় বিজয়ের নেতারা লাঠিসোঁটা রামদা নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হল ও আর সিক্সটি নাইনের নেতা কর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে অবস্থান নিয়ে একে অপরকে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।

পরে আড়াইটার দিকে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।আড়াইঘন্টা ধরে চলা এ এসময় উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন নেতা কর্মী আহত হয়েছেন বলে চবি মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

আহত ছাত্রলীগ কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ১৫ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে৷ তাদের শরীরে ইটপাটকেল নিক্ষেপের আঘাতের চিহ্ন ছিল। এর মধ্যে সাতজনের সেলাই লেগেছে। চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের নেতা কর্মীরাই একে অপরকে দোষারোপ করছেন। জানতে চাইলে বিজয় গ্রুপের নেতা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, সিক্সটি নাইনের নেতারা শহর থেকে বহিরাগত নিয়ে এসে হামলা করেছে। এতে তাদের বেশ কয়েকজন নেতা কর্মী আহত হয়েছেন।

অপরদিকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম বলেন, বিজয়ের এ পক্ষটি সবার সঙ্গেই ঝামেলা করে। কারণ এ পক্ষের মধ্যে শিবিরের নেতা কর্মীদের অনুপ্রবেশ রয়েছে। শাখা ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেন, গতকালের ঘটনার রেশ ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আমরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এখন দুই পক্ষকেই যার যার হলে পাঠিয়ে দিয়েছি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।