বইমেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে বই পড়ায় মানুষকে আগ্রহী করে তোলা- মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, বইমেলা হচ্ছে বাঙালীর প্রাণের উৎসব। এ উৎসব বাঙালী জাতিসত্ত্বা দাঁড় করাতে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বইমেলা শুধু বই কেনা-বেচার জায়গা নয়, বইমেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে বই পড়ায় মানুষকে আগ্রহী করে তোলা।

রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিজেকেএস জিমনেসিয়াম মাঠে চসিক মেয়র অমর একুশের উপলক্ষ্যে আয়োজিত বইমেলার উদ্বোধন শেষে আলোচনা সভায় এসব বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবেদিত বই মেলা চলবে ১৯ দিন।

চসিক মেয়র বলেন, বইয়ের বিকল্প বই, এটি এমন একটি মাধ্যম যা আমাদের মনকে বিকাশিত করে, জ্ঞান সমৃদ্ধ আর হৃদয়ের পরিতৃপ্তিকে করে পরিপূর্ণ। সভ্যতার ক্রমবিকাশে মানুষের চিন্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম বই যা আলোকিত মানুষ ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের অন্যতম অনুসঙ্গ।

তিনি আরও বলেন, ৫২র ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট অত্যন্ত বিরাট। এর ধারাবাহিকতায় ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বাঙালীর নিরঙ্কুশ বিজয়, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণ অভ্যুথান, ৭০’র নির্বাচনে অভূতপূর্ব বিজয় এবং সর্বশেষ ৭১’রে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। এইসব প্রেক্ষাপটের নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। এতে আরো বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম।

আলোচনা রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহম্মদ, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, জহর লাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, পুলক খাস্তগীর, মো. মোর্শেদ আলী প্রমূখ।

মেয়র একুশে বইমেলা চট্টগ্রামে আয়োজনের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, চট্টগ্রাম স্বাধীনতা সংগ্রামসহ অনেক বীরগাথা ইতিহাস সৃষ্টিতে সর্বদা অগ্রণী ভূমিকায় ছিলো। এমনকি ভাষা আন্দোলনে প্রথম প্রতিবাদী কবিতা রচিত হয় চট্টগ্রামের কবি মাহবুবুল আলম চৌধুরীর কলমে। বলাবাহুল্য পূর্ববাংলায় প্রথম সাহিত্য সম্মেলন আয়োজন হয়েছিলো চট্টগ্রামের হরিখোলা মাঠে (বর্তমানে মোমিন রোডস্থ মৈত্রী ভবন) এবং এতে সভাপতিত্ব করেছিলেন আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ। অনুষ্ঠানটিতে দু’বাংলার অনেক খ্যাতিমান কবি, সাহিত্যিকের পদাচারণা হয়েছিলো।

১৯ দিন ব্যাপি এই মেলায় থাকছে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, পেশাজীবী সমাবেশ, ছড়া উৎসব, চাঁটগা উৎসব, মরমী উৎসব, কবিতা উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বির্তক প্রতিযোগিতা। এসব বর্ণিল আয়োজনে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারা দেশের খ্যাতিমান শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবি, মুক্তিযোদ্ধারা অংশগ্রহণ করবেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।