মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে শুরু হল মধ্য দশক

দেখতে দেখতে রমজানের প্রথম দশক শেষ হয়ে আজ দ্বিতীয় দশকের প্রথম দিন। দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের দশক।

মাগফিরাতের এই দশকে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য রেখেছেন অফুরন্ত ক্ষমার ভান্ডার। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেন, ‘বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম (গুনাহ) করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না, নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ ( সুরা আয -যুমার ৫৩)

এই আয়াত দ্বারা মহান আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের যেন এটাই আশ্বস্ত করেছেন যে রমজানের রহমতের দশক শেষ হয়েছে তো কী হয়েছে, আল্লাহর রহমত তো ফুরিয়ে যায়নি, এমনকি আল্লাহ বান্দার সব গুনাহ মাফ করার কথা বলেছেন।

অন্য আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, ‘তারা আল্লাহর কাছে তওবা করে না কেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে না কেন? আল্লাহ যে ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সুরা মায়িদা- ৭৪) তওবা ও ক্ষমাপ্রার্থনা দ্বারা আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক মজবুত হয়।

রাসুল (সা.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন ১০০ বার করে ইস্তেগফার করতেন। রাসুল সা: বলেন, ‘আমি তোমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেব। তোমরা ইস্তেগফার করো, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব (মুসলিম)।’

সিয়াম সাধনার মধ্যে কোনোরকম ভুলত্রুটি হয়ে গেলে তৎক্ষণাৎ তওবা ও ইস্তেগফার করে নিজেদের সংশোধন করে নেয়া দরকার। আল্লাহ বলেন, ‘আর তিনিই (আল্লাহ) তার বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং পাপগুলো ক্ষমা করে দেন (সূরা আশ শুরা :১৫)’

মহান রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেন, ‘তোমাদের অন্তরে যা আছে, সে সম্পর্কে তোমাদের রবই অধিক জ্ঞাত। যদি তোমরা নেককার হও তবে তিনি তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারীদের প্রতি অধিক ক্ষমাশীল।’ ( বনি ইসরাইল, আয়াত : ২৫)

মাগফিরাত মানে ক্ষমা। নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া। খারাপ কাজগুলো পরিহার করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। নিয়ম-কানুন মেনেই আমরা রোজা পালন করে আসছি। কিন্তু মিথ্যা কথা, কুটনামি করা, গিবত বা পরনিন্দা করা, মিথ্যা কসম খাওয়া, কুনজর বা কামুক দৃষ্টিতে তাকানো এসব খারাপ দিকগুলো কি আমরা পরিহার করতে পেরেছি? এ খারাপ বিষয়গুলো রোজারকে ধ্বংস করে দেয়। রমজানের প্রথম দশকে আমল শুদ্ধ করার ওপর নির্ভর করে ক্ষমার সুসংবাদ।

ইমাম বুখারি রচিত আল মুফরাদ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, জাবির ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, জিবরাইল (আ.) এসে নবীজিকে (সা.) বললেন, ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তি, যে রমজান মাস পাওয়ার পরও নিজের গুনাহ মাফ করে নিতে পারল না। তখন রাসূল (সা.) বললেন, ‘আমিন’।

আমাদের মনে রাখা দরকার, যে বিষয়ে মহানবী (সা.) দোয়া করেছেন তা কখনো বিফলে যাবে না। তাই আমাদের মাগফিরাতের এ দশকে সতর্ক হওয়া জরুরি। কারণ বিদায় নিয়েছে রহমতের প্রথম দশক। আমাদের ভেবে দেখা দরকার, আত্মশুদ্ধি অর্জনে আমরা নিজেদের কতটুকু কাজে লাগাতে পেরেছি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মাগফিরাতের দশকে ক্ষমা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএফ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।