মাতৃভাষার বই নিয়ে ক্লাসে ফিরছেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিশুরা

সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হয়েছে। এই রেওয়াজ অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটির লংগদুতেও বিভিন্ন স্কুলে সাধারণ বইয়ের পাশাপাশি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর (চাকমা) শিক্ষার্থীদের হাতে তাদের মাতৃভাষার বই তুলে দেওয়া হয়েছে। আর নতুর বই পেয়ে দীর্ঘ ছুটির পরে উচ্ছ্বাসিত হয়ে শ্রেণিতে পাঠে ফিরছেন শিশুরা।

জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি পার্বত্যাঞ্চলের লংগদুতে চাকমা জাতিগোষ্ঠীর শিশুরা প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তাদের মাতৃভাষার বই পেয়েছে। এই বই পেয়ে এবং পাঠে ভীষণ আনন্দিত শিশুরা।

সম্প্রতি উপজেলার মানিক্যপাড়া চিকনচান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বকুল কান্তি চাকমার সাথে কথা বললে তিনি জানান, তার বিদ্যালয়ে চাকমা শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তিন শ্রেণিতে নিজেদের মাতৃভাষায় লেখা বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এবং পাশাপাশি নিজ ভাষার বই ক্লাস নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা।

অভিভাবকরা বলেন, আমরা তো নিজ ভাষায় পড়তে পারিনি। আমাদের ছেলে-মেয়েদের নিজ ভাষার অক্ষর জানার সুযোগ হলো। নিজের ভাষায় বর্ণমালা সম্পর্কে জানতে পারবে, লিখতে ও পড়তে পারবে। সন্তানরা মাতৃভাষায় বই পাওয়ায় আমাদের খুবই ভালো লাগছে।

নিজেদের ভাষা ও বর্ণমালা শিখতে ও সংরক্ষণে সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও পর্যাপ্ত দক্ষ শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা এসব বই সঠিকভাবে পড়তে পারছে না বলে জানায় অভিভাবকরা। তাই বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় পাঠদানের জন্য প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ দানের দাবি জানায় তারা।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে ৭টি ইউনিয়নে ৭৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাকমা সম্প্রদায়ের প্রাক প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকেই মাতৃভাষার বই দেওয়া হবে। বেশিরভাগই দেয়া হয়েছে, তবে কয়েকদিনের মধ্যেই বাকিদের হাতে পৌঁছে যাবে তাদের নিজ ভাষার বই। আরো জানা গেছে, এখন তারা নিজ ভাষার বইয়ে ক্লাসে ফিরছেন। দীর্ঘদিন বিভিন্ন কারণে বিদ্যালয় বন্ধ ছিল তবে নতুন বছরের শুরু থেকেই ক্লাস কার্যক্রম চলমান থাকবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সাল থেকে শিশুদের নিজস্ব মাতৃভাষার বই বিতরণ করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।