রমজানেও চলবে বাজার মনিটরিং, প্রশাসনের টার্গেটে ‘সিন্ডিকেট’

রমজান আসলেই দাম বৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন খুচরা-পাইকার থেকে শুরু করে সব ব্যবসায়ী। সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি, বাজারে কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি, ওজনে কারসাজি—সব মিলিয়ে ভোক্তাদের ‘খাবলে খাওয়ার’ ধান্দায় থাকে বিক্রেতারা। ‘তথ্য প্রবাহের’ প্রচলিত কোন মাধ্যম না থাকায় অভিযোগও দিতে পারেন না ভোক্তারা। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়ে চড়া দামে পণ্য কিনতে হয় তাদের; যা প্রভাব ফেলে জীবনমানে। তবে চট্টগ্রামবাসীর জন্য সুখবরের বিষয় হলো—এসবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। পুরো রমজানজুড়ে বাজার মনিটরিং ছাড়াও জেলা প্রশাসনের টার্গেটে থাকবে পাইকার এবং খুচরা ব্যববসায়ীদের মধ্যে মধ্যসত্ত্বকারীরা।

বুধবার (২২ মার্চ) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রাম খবরকে এসব বিষয় জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পবিত্র মাহে রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। পুরো মাসজুড়ে বাজার মনিটরিং করা হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে মহানগর ও উপজেলায় ৪০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে মিটিং করেছি। আমরা এর সুফলও পাচ্ছি। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পণ্য সরবরাহ চলমান রয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, কেউ অসৎ উপায় অবলম্বন করে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে বাঁচতে পারবে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। অনেক সময় কিছু সিন্ডিকেট পাইকার ও খুচরা বিক্রেতার মাঝে কাজ করে ফায়দা লুটতে চায়। অনেকে আবার কৃত্তিম সংকট তৈরি করে দাম বৃদ্ধি করতে চায়। এসবের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া ব্যবসায়ীদের নিয়ম মেনে ব্যবসায় করার জন্য আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

এদিকে বাজারে রমজান উপলক্ষ্যে জিনিসপত্রের দাম যাতে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে না পড়ে সেজন্য ইতিমধ্যেই অভিযানে নেমেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। বুধবার (২২ মার্চ) নগরীর খাতুনগঞ্জ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি ) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক এবং সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্লাবন কুমার বিশ্বাস।

এ সময় বাজারমূল্যর চেয়ে চড়া দামে ভোগ্যপণ্য বিক্রি, মূল্যতালিকা না থাকা এবং ক্রয়-বিক্রয় রশিদ অসংরক্ষণের দায়ে জুয়েল এন্টারপ্রিজকে ১০ হাজার, হাজী জসিম ট্রেডার্স, এফ সি ট্রেডার্স, আল মদিনা ট্রেডার্স প্রত্যেককে ৫ হাজার এবং আল্লাহর দানকে ২ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ২৭ হাাজার টাকা জরিমানা করা হয় । এছাড়া ভোজ্য তেল, চাল, চিনি, পেঁয়াজ, খেঁজুরসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যতালিকা এবং ক্রয়-বিক্রয় রসিদ যাচাই করা করা হয়।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক বলেন, বাজারে বিভিন্ন দোকানে জরিমানা করার পাশাপাশি পুরো মাসজুড়ে মনিটরিং অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও বাজারে পাইকারি এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে মধ্যসত্ত্বকারী একটা সিন্ডিকেট আছে, যারা পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে অনেকাংশে দায়ী। যাদের মাধ্যমে একটা প্রোডাক্টের দাম বিভিন্ন হাত বদল হয়ে দাম বাড়তে থাকে। এই বিষয়টি গুরত্বসহকারে নিয়ে এদের ট্রেড লাইসেন্স চেকিংসহ পরবর্তীতে এদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এছাড়া সরবরাহ কমার অজুহাতে যাতে জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে না পরে সেই বিষয়েও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।