রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটায় দাঁড়িয়ে আছে শত বছরের দোতলা মাটির ঘর

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি ঘর। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর, সরফভাটা, পদুয়া, বেতাগী উপজেলায় গত কয়েক বছর আগেও নজরে পড়ত মাটির ঘর। প্রচণ্ড গরম ও শীতে বসবাসের উপযোগী ছিল এই মাটির ঘর। এক সময় এই এলাকার ধনী-গরিব সবাই সেই ঘরে বসবাস করতেন। তবে কালের বিবর্তনে ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত হতে বসেছে মাটি দিয়ে তৈরি ঘর। তবে দাদা আশরাফ আলী মাস্টারের শত বছরের তৈরি মাটির ঘরে এখনও বসবাস করছেন নাতি আবু বক্কর। আর সেই সুবাদে সরফভাটা ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের সাইয়েদুলখীল এলাকায় এখনও দেখা মিলছে ¬¬দুতলা বিশিষ্ট মাটির ঘর।

আবু বক্কর জানান, আমার দাদা আশরাফ আলী মাস্টার ১৯৬১ সময়ে দুতলা মাটির ঘরটি নির্মাণ করেছিলেন। মাটির দুতলা ঘরটি তৈরি করতে তিন বছর সময় লেগেছে। এই ঘরে আমার বাবা ছিলেন এখন বর্তমানে আমি বসবাস করছি। আরামদায়ক মাটির ঘরে দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি বিত্তবানরাও একসময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতেন। বৃষ্টি বা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত না হলে এসব ঘর অনেক বছর পর্যন্ত টিকে থাকে বলেও জানান তারা। এই মাটির ঘরে প্রতিটি দরজা জানালার এবং সংযোগে উন্নত মানের কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মানুষের আধুনিক জীবনযাপনের ইচ্ছা ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবাই মাটির ঘর ভেঙে টিন আর ইটের পাকা-আধাপাকা বাড়ি তৈরি করেছেন। বিলুপ্ত হতে চলেছে অতীতের মাটির ঘর।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউল গনি ওসমানী বলেন, আমি রাঙ্গুনিয়ায় এসেছি বেশি দিন হয়নি। অল্প সময়ে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় এখনও মাটির ঘর দেখা যায়। অনেকেই সংষ্কার করে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া ঘরে আজও বসবাস করছেন। মানুষের অর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে জীবন মানের ও উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আর তাই হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালিদের চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী মাটির এই ঘরের ঐতিহ্য।

সরফভাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন জানান, সরফভাটায় ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী এবং নান্দনিক মাটির ঘর রয়েছে। বড় বাড়িতে একটি মাটির ঘর হয়েছে, আশরাফ আলী মাস্টারের দুতলা মাটির ঘর, আমাদের সরফভাটাতে বেশি মাটির ঘর দেখা যায় মীরেরখীল এলাকায়। এই সমস্ত মাটির ঘর পারিবারিক ঐতিহ্য বংশীয় মর্যাদা এবং পরিচিতি বহন করে। এ সমস্ত নান্দনিক এবং ঐতিহ্য মাটির ঘর আমাদের সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।