শবেবরাতের মাংস-রুটি নিয়ে ঝগড়ায় খুন গৃহবধূ, ৭ বছর পর খুনিরা পিবিআইয়ের জালে

বাঁশখালীর কাথারিয়া ইউনিয়নের চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ রুমি আক্তার (২২) হত্যা মামলার পলাতক আসামি শ্বশুর-শাশুড়িকে ৭ বছর পর হাটহাজারী থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই।

গত ১৮ আগস্ট বিশেষ অভিযান চালিয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামি বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম মানিক পাঠান গ্রামের ইয়াকুব নবী (৬৭), ও তার স্ত্রী মোছাম্মৎ খতিজা বেগমকে (৫৮) হাটহাজারী থানার চৌধুরীহাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এরপর ১৯ আগস্ট তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত ইয়াকুব নবীকে ৪ দিনের এবং খতিজা বেগমকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে থাকাকালীন আসামি মোছাম্মৎ খতিজা বেগম উক্ত হত্যাকাণ্ডে নিজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং অন্যান্য আসামিদের নাম উল্লেখ করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামি ইয়াকুব নবীর ছেলে আব্দুল মান্নানের সাথে রুমি আক্তারের ২০১৪ সালে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের ২৫ দিন পর রুমি আক্তারকে রেখে স্বামী আবদুল মান্নান ওমানে চলে যান। আব্দুল মান্নান ওমানে যাওয়ার পর থেকে শ্বশুর-শাশুড়ি রুমি আক্তারকে নানানভাবে নির্যাতন করতেন।

মামলার ১ নম্বর আসামি শ্বশুর ইয়াকুব নবী ছেলের বৌ রুমিকে মারধর করলে তার পিতা আব্দুস ছমদ চৌধুরী শ্বশুর বাড়ি থেকে মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মারধর করবে না মর্মে আসামি নবী পুনরায় ছেলের বৌকে নিয়ে আসেন।

২২ মে ২০১৬ সালের সন্ধ্যায় পবিত্র শবে বরাতের দিন রান্না করা মাংস ও রুটি নিয়া ঝগড়ার এক পর্যায়ে ভিকটিম রুমি আক্তারকে তার শ্বশুর গলা চেপে ধরে হত্যা করে। উক্ত হত্যাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ৭টায় গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে বাপের বাড়িতে খবর দেয়। এই ঘটনায় রুমি আক্তারের পিতা আব্দুস ছমদ চৌধুরী বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করলে ইয়াকুব নবী ও মোছাম্মৎ খতিজা বেগম পালিয়ে যায়।

বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলাটির বাদীর নারাজীর প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার নিকট তদন্তভার দেয়া করা হয়।

পিবিআই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পলাতক দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। হত্যাকাণ্ডের পর ৭ বছর যাবৎ তারা হাটহাজারীতে আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানা যায়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।