স্থাপত্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল বাঁশখালীর ‘শিকড়’

স্থাপত্যশিল্পে একাধিক মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের নান্দনিক বাড়ি ‘শিকড়’।

পুরস্কারের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘আর্কিটেকচার মাস্টারপ্রাইজ ২০২১, ইউরেশিয়ান প্রাইজ ২০২১, আইএবি এওয়ার্ড ২০২০। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াস্থ ফরমানি গ্রুপ পরিচালিত ‘আর্কিটেকচার মাস্টার প্রাইজ ২০২১’ এ একক পরিবার আবাসিক স্থাপত্য বিভাগে সারা বিশ্ব থেকে বাছাইকৃত ভবনের মধ্যে ‘বেস্ট অব বেস্টস’ পুরস্কার অর্জন করে শিকড়।

ইতিপূর্বে রাশিয়ার ইউনিবার প্রেস কর্তৃক পরিচালিত সম্মানজনক ইউরেশিয়ান পুরস্কার ২০২১ এ প্রাইভেট হাউজ ক্যাটাগরিতে সেরা হিসেবে গোল্ড ডিপ্লোমা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে ‘শিকড়’।

স্থাপত্যশিল্পে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হিসেবে ইনস্টিটিউট অফ আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ (IAB) কর্তৃক IAB কমমেন্ডেশন এওয়ার্ড ২০২০ পুরস্কার লাভ করে ‘শিকড়’।

২০২০ সালে বহুল প্রচারিত আন্তর্জাতিক ওয়েব পোর্টাল ARCHDAILY বাঁশখালীর প্রত্যন্ত গ্রামের এই ভবনটির ছবি ও বর্ণনা প্রকাশ করলে শিকড় বিশ্বজুড়ে স্থপতি ও প্রকৌশলীদের নজর কাড়ে। তারই স্বীকৃতি হিসেবে পরবর্তিতে ইউরোপ ও এশিয়া ভিত্তিক অনেক ওয়ের পোর্টাল ও ম্যাগাজিনে শিকড়ের ছবি ও প্রতিবেদন প্রকাশ হতে থাকে।

২০২১ সালে জামানির Lifestyle Today নামক ম্যাগাজিনে শিকড় প্রথমবারের মত ছাপার কাগজে প্রকাশিত হয়।

শিকড় নিয়ে ম্যাগাজিনে প্রতিবেদন
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত প্রকল্প শিকড়ের স্থাপত্যবিদ বাঁশখালীর কৃতী সন্তান স্থপতি মোহাম্মদ নঈমুল আহসান খান। সহ স্থপতি হিসেবে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী স্থপতি ফারজানা রহমান।

মোহাম্মাদ নঈমুল আহসান খান ২০০৬ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। স্নাতক শেষ করার পর তিনি ঢাকাভিত্তিক স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান ‘এস.ইসলাম কনসালটেন্ট’ এ বেশ কয়েক বছর কাজ করেন। ২০০৬ সালে তিনি কো ফাউন্ডার হিসেবে মাত্রা আর্কিটেক্ট প্রতিষ্ঠা করেন।

২০০৯ সাল থেকে তিনি তার বর্তমান প্রতিষ্ঠান স্পেটিয়াল আর্কিটেক্টস (Spatial Architects) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দ্য ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিকের স্থাপত্য বিভাগে ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

শিকড় প্রকল্পের সহ স্থপতি ফারজানা রহমান ২০০৭ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। স্নাতকের পর ঢাকাভিত্তিক এএন্ডএম আর্কিটেক্টসে বেশ কয়েক বছর কাজ করেন। ২০০৯ সালে তিনি স্পেটিয়াল আর্কিটেক্টস (Spatial Architects) এ সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে যুক্ত হন।

শিকড়ের পেছনে আছে প্রাকৃতিক জলাধার
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নান্দনিক ভবন নির্মাণের স্বীকৃতি হিসেবে এই স্থপতি দম্পতি ইতিমধ্যে একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। বাংলাদেশে স্কুল কাম শেল্টার ডিজাইনের জন্য ২০০৯ সালে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পরিচালিত ফায়েল খায়ের প্রোগ্রামের আওতায় আন্তর্জাতিক স্থাপত্য নকশা প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার লাভ করেন স্থপতি নাইমুল আহসান খান ও ফারজানা রহমান।

তারই ধারবাহিকতায় বাঁশখালীর উপকূলীয় অঞ্চলসহ সারাদেশে তাঁদের নকশায় প্রায় তিন শতাধিক ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও বিদ্যালয় তৈরি হয়েছে। এছাড়াও একাধিক জাতীয় স্থাপত্য প্রতিযোগিতায় তাঁরা পুরস্কৃত হয়েছেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।