৫ মিনিটেই মোটরসাইকেল হাওয়া করে চোরচক্র, বাদ যায়নি পুলিশের গাড়িও

চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মাত্র ৫ মিনিটেই মোটরসাইকেল চুরি করে হাওয়া হয়ে যেতো একটি মোটরসাইকেল চোরচক্র। তাদের চুরির কবল থেকে রেহায় পায়নি পুলিশের গাড়িও। কারারক্ষী, সার্জেন্ট, মেডিকেল প্রমোশন অফিসারসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় তদন্তে নামে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। চুরির ঘটনাস্থল থেকে বাকলিয়া-কর্ণফুলী টোলপ্লাজা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানের প্রায় ৬৫০টি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে মো. আনোয়ার হোসেন (৩৫), মো. সাজ্জাদ (২৭) নামের দুজনকে চোরচক্রের সদস্য হিসেবে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করে পুলিশ। তাদের গতিবিধির ওপর বৃদ্ধি করা হয় পুলিশের নজরদারি।
নজরদারির একপর্যায়ে সনাক্তকৃত সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন (৩৫) ও মো. সাজ্জাদ (২৭) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পূর্ব গেইট দিয়ে প্রবেশ করলে তাদের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখে পুলিশ। মো. আনোয়ার হোসেন মেডিকেলের পূর্ব গেইটের পাশে রাখা একটি মোটর সাইকেলে বসে সাজ্জাদের ক্লিয়ারেন্স পেয়ে তার হাতে থাকা মাষ্টার কি-দিয়ে মোটর সাইকেলটি লক খুলে ইঞ্জিন চালু করলে পুলিশের অভিযান টিম মো. আনোয়ার হোসেন ও মো. সাজ্জাদকে আটক করে। তাদের দেয়া তথ্যে কক্সবাজার জেলার রামু থানাধীন বিভিন্ন দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ ইউসুপ (মেকানিক) (২৪) কে আটক করা হয়। ইউসুপের দেয় তথ্যে টেকনাফ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোরাইমাল ক্রয়-বিক্রয়কারী ও চোর চক্রের সদস্য মোঃ জাহিদুল ইসলামকে (২০) আটক করে পুলিশ।

এসময় আনোয়ার ও সাজ্জাদের কাছ থেকে ১টি, ইউসুপের কাছ থেকে ৩টি ও জাহিদুলের কাছ থেকে ৩টিসহ মোট ৭ টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেলগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি লাল রঙের সুজুকি জিক্সার, নিয়ন কালারের একটি হোন্ডা হর্ণেট, কমলা কালারের একটি হোন্ডা হর্ণেট, লাল রঙের একটি হোন্ডা লিভো, নীল রঙের একটি পালসার, লাল রঙের একটি হিরো গ্লামার ও নীল রঙের একটি সুজুকি জিক্সার এসএফ।

আটককৃতরা হলেন, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানার চৌধুরিহাট এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন, কক্সবাজার রামু থানার মকবুল হোসেনের ছেলে মো. জাহেদুল ইসলাম, একই এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. ইউসুপ ও চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানার পূর্ব ঘাটিয়াডাঙ্গা এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে মো. সাজ্জাদ।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পাঁচলাইশ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নাজিম উদ্দিন মজুমদার চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, আটককৃত মো. আনোয়ার হোসেন ও মো. সাজ্জাদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজসহ নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কিছু মোটর সাইকেল চুরি করে কক্সবাজার রামুতে মোঃ ইউসুপ নামে এক মেকানিকের কাছে বিক্রি করে বলে স্বীকারোক্তি দেয়। তাদের দেয়া তথ্যমতে কক্সবাজার জেলার রামু থানাধীন বিভিন্ন দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ ইউসুপ (মেকানিক) (২৪) কে আটক করা হয়। তার দোকান থেকে ৩টি চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়। মোঃ ইউসুপকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, মোঃ আনোয়ার হোসেন এর কাছ থেকে নেওয়া মোটর সাইকেলগুলোর মধ্যে ৩টি মোটর সাইকেল সে বিক্রির জন্য মোঃ জাহিদুল ইসলাম এর কাছে দিয়েছে। অভিযান টিম উখিয়া, কক্সবাজার সদর, টেকনাফ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোরাইমাল ক্রয়-বিক্রয়কারী ও চোর চক্রের সদস্য মোঃ জাহিদুল ইসলামকে (২০) আটক করে এবং তার বাসা থেকে ০৩টি চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার করে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।