দ. আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাস গড়লো টাইগাররা

আগুন ঝরানো বোলিংয়ে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। পরে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন তামিম ইকবাল। দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে রীতিমতো উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। গড়ল সিরিজ জয়ের ইতিহাস।

বুধবার (২৩ মার্চ) তৃতীয় ওয়ানডেতে সেঞ্চুরিয়নে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে বল হাতে বল হাতে আগুন ঝরান তাসকিন আহমেদ। পাশাপাশি উইকেট শিকারের মিছিলে ছিলেন সাকিব আল হাসান, মেহেদি হাসান মিরাজ ও শরিফুল ইসলাম। টাইগারদের এমন দাপুটে বোলিংয়ে মাত্র ১৫৪ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।

ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হাতে থাকতেই জয় ছিনিয়ে আনে বাংলার ব্যাটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ হারে ২-১ ব্যবধানে।

তিন ম্যাচের সিরিজে এর আগে একটি জয় পেয়েছিল টাইগাররা। একটি জয় ছিল প্রোটিয়াদেরও। তৃতীয় ম্যাচটি যেন অঘোষিত ফাইনাল; আর সে ম্যাচেই বাজিমাত করে সিরিজ নিজেদের করে নেয় টাইগাররা।

বাংলাদেশ অবশ্য সিরিজটা জিতল দাপুটে ক্রিকেট খেলে। তাসকিন আহমেদের ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট শিকারের দিনে মাত্র ৩৭ ওভারেই ১৫৪ রানে গুটিয়ে যায় টস জিতে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা। যা টাইগারদের বিপক্ষে দলটির সর্বনিম্ন সংগ্রহ।

এরপর ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন তামিম। ৮২ বলে ১৪ চারে ৮৭ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দেন তিনি।

লিটন দাসকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই ১২৭ রান যোগ করেন তামিম। লিটন ২ রানের জন্য ফিফটি মিস করেছেন। ৫৭ বলে ৪৮ রান করেছেন তিনি ৮ চারে। পরে সাকিব যোগ দেন তামিমের সঙ্গে। জয়সূচক রান আসে সাকিবের ব্যাট থেকেই। রাবাদাকে চার হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।

প্রথম ওয়ানডে জয়ের নায়ক ছিলেন সাকিব। ৬৪ বলে খেলেছিলেন ৭৭ রানের ইনিংস। পরিবারের একাধিক সদস্যের অসুস্থতার জন্য শেষ ওয়ানডের আগেই দেশে ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু পরে দলের স্বার্থে শেষ ম্যাচটা খেলে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। শেষ পর্যন্ত ফেরার পথে সাকিবের সঙ্গী হচ্ছে সিরিজ জয়ের আনন্দ।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আগ্রাসী শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে শুরুটা ভালই করে দুই ওপেনার। তবে বেশিক্ষণ এই জুটি টিকতে দেননি বাংলাদেশি স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। তার বলে ব্যক্তিগত ১২ রানে আউট হন কুইন্টন ডি কক। এরপর কাইল ভেরেইনেকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন। আউট হওয়ার পূর্বে ৯ রান করেন প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।

নিজের দ্বিতীয় উইকেট হিসেবে প্রোটিয়া ওপেনার জানেমান মালানকে আউট করেন তাসকিন। মালান ব্যাট হাতে তুলেন ৩৯ রান। আর সাকিবের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ার আগে ২ রান করেন বাভুমা।

এরপরও স্বাগতিকদের স্বস্তি দেয়নি টাইগাররা। রাসি ফন ডার ডুসেনকে ৪ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরান শরিফুল ইসলাম। তাসকিন তার তৃতীয় উইকেট তুলে নেন প্রিটোরিয়াসকে ফিরিয়ে। ২০ রান করে আউট হন এ অলরাউন্ডার।

সেঞ্চুরিয়নে আগুন ঝরিয়েছেন তাসকিন। স্বাগতিকদের কাঁপিয়ে একে একে তুলে নিয়েছেন প্রোটিয়াদের পাঁচ উইকেট। ১৬ রান করা ডেভিড মিলারকেও আউট করেন তাসকিন। আর ৪ রান করা কাগিসো রাবাদাকে আউট করে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নেন এ পেসার। এর আগে ভারতের বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন তাসকিন।

শেষ দিকে কেশভ মহারাজ ২৮ রান করেন। তবুও ৩৭ ওভারে ১৫৪ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিনের ফাইফার ছাড়াও দুটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান, এছাড়া একটি করে উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম এবং মেহেদি হাসান মিরাজ।

এমএফ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।