কাভার্ড ভ্যানে ‘চলন্ত বোম’, র‌্যাবের হাতে আটক ৩

মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সরেজমিন প্রতিবেদনের পর পেট্রোলপাম্প এবং সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের অনুমোদন দেয় সরকার। অনুমোদনের পর নিয়মিত থাকে তদারকি। কারণ সামান্য ত্রুটি কিংবা অবহেলায় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
আর এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি মানুষের জীবনের ঝুঁকিকে তুচ্ছজ্ঞান করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে কাভার্ড ভ্যানেই স্থাপন করেছে ভ্রাম্যমাণ ফিলিং স্টেশন, যাকে বল হয়ে থাকে ‘চলন্ত বোম’। এরকম চলন্ত বোমবাহী চারটি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন—র‌্যাব-০৭।

সোমবার (২৭ মার্চ) র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার বিষয়টি চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করে বলেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামের বেশ কয়েটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমরা আমাদের নজরদারি জোরদার করেছি। আমাদের কাছে তথ্য ছিল কিছু অসাধু ব্যক্তি অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ ও অনিরাপদ উপায়ে কাভার্ড ভ্যানে ভ্রাম্যমান সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপন করে অবৈধভাবে সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় তরল গ্যাস বিক্রয় করছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আমরা সাতকানিয়ার কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক এলাকা থেকে ৩ জনকে আটক করেছি। অভিযান চলাকালে আটককৃতরা কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এছাড়াও তাদের কাছে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কোন অনুমোদনও ছিলো না। এসময় ৪টি কাভার্ড ভ্যান ও ৬১৪টি গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ করা হয়েছে।

আটককৃতরা হলো—চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া থানার কেঁওচিয়া গ্রামের মো. আব্দুল হকের ছেলে মো. আজিজুল হক (৪৫), একই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মো. আলমগীর (৪০) ও সাতকানিয়া থানার হাতুরাপাড়া গ্রামের মৃত আহমদ হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবির (২৭)।

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধভাবে রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপন করে কাভার্ডভ্যানগুলোর বডির সাথে সংযুক্ত সিলিন্ডারের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ সিএনজি ফিলিং স্টেশন স্থাপন করে মিটার ব্যতীত মুল গ্যাস লাইন থেকে গ্যাস মজুদ করে তা অবৈধভাবে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাশখালীসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ৪৩ টাকার পরিবর্তে ৬২ টাকা দরে বিক্রি করে বলে স্বীকার করে।

র‌্যাব—০৭’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মাহবুব আলম বলেন, এধরণের ভ্রাম্যমান সিএনজি স্টেশনে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে আশপাশে আগুন ছড়ালে সম্পদের ক্ষতি তো হবেই, বিস্ফোরণের শব্দে প্রচুর প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে। তাই চট্টগ্রামের শিল্পাঞ্চলে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পর আমরা আমাদের নজরদারি জোরদার করি। তখন সংবাদ পাই এধরণের ভ্রাম্যমান সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনের। চারটি কাভার্ড ভ্যানে আমরা ৬১৪টি গ্যাস সিলিন্ডার পেয়েছি। তিনজনকে আটক করা হয়েছে। মালিকদেরও আমরা আইনের আওতায় আনতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।