চবিতে এক সংঘর্ষ শেষ হতে না হতেই আরেক সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপ বিজয় ও সিক্সটি নাইনের মধ্যকার সংঘর্ষ শেষ হতে না হতেই আরেক সংঘর্ষে জড়িয়েছে দুই উপগ্রুপ। এবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে উপগ্রুপ সিএফসি ও সিক্সটি নাইন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) রাত ৮টায় উপগ্রুপ দুটির অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়ায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রেলস্টেশন এলাকায় কথা কাটাকাটির জেরে সিএফসির অনুসারী ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ফাহিমকে মারধর করে সিক্সটি নাইনের কয়েকজন কর্মী। এরই জের ধরে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপ দুটি।

এ সময় সিক্সটি নাইনের অনুসারীরা শাহজালাল হল ও সিএফসির অনুসারীরা শাহ আমানত হল এলাকায় অবস্থান নেয়। উভয় পক্ষকেই দেশীয় অস্ত্রের মহড়াসহ একে অপরকে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে।

এছাড়াও পেশাগত দায়িত্বপালনকালে সাংবাদিকদের ওপর কয়েক দফায় দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ চড়াও হয় সিএফসির অনুসারীরা।

পরবর্তীতে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্ঠায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত দশ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাঈদুল ইসলাম সাঈদ বলেন, দুপুরেও আমাদের একটা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। ওটা যখন আমরা সমাধানের দিকে যাচ্ছিলাম তখন রেলস্টেশন এলাকায় সিএফসির জুনিয়ররা আমাদের এক সিনিয়র কর্মীর সাথে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বেয়াদবি করে। এটা নিয়ে দুই হলের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সিএফসি বর্তমানে নেতৃত্বহীন অবস্থায় আছে। তাই ওদের ছেলেরা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে।

জানতে চাইলে সিএফসির নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মির্জা খবির সাদাফ বলেন, আমাদের একটা ছেলেকে সিক্সটি নাইনের ছেলেরা স্টেশনে বিনা কারণে মারধর করেছে। তারা আসলে নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে। ওরা জানে যে কমিটি হবে কিন্তু চায় না কমিটি আসুক। তাই এরকম উদ্দেশপ্রণদিত এগুলো করেছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম শিকদার বলেন, রাত ৮ টায় হঠাৎ করেই দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। আমরা পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুপুরেও ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছিলো। সেই সংঘর্ষের জন্য ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাতের সংঘর্ষও তদন্তেও তারা কাজ করবেন।

সবার সামনেই দেশীয় অস্ত্রসহ মহড়া দিচ্ছে কিন্তু প্রশাসন শক্ত অবস্থান নিতে পারছেনা কেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, এটা আসলেই দুঃখজনক। আমরা অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি, কিন্তু পারিনা। তবে আমাদের চেষ্টা অব্যহত থাকবে।

এর আগে একইদিন দুপুর ১ টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ শাহজালাল হলে অবস্থানরত সিক্সটি নাইন ও সোহরাওয়ার্দী হলে অবস্থানরত বিজয়ের অনুসারীদের মধ্যে। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়। তাদের। মধ্য থেকে গুরুতর অবস্থায় ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বাকিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।