জিপিএইচ ইস্পাত কারখানায় আবারও ঝরলো শ্রমিকের প্রাণ

লোহার রড় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ ইস্পাত কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে রনজিত দাস (৩০) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। নিহত রনজিত দাশ উপজেলার কুমিরা ঘাটঘর এলাকার জেলে পাড়ার রাখাল সাধুর বাড়ির শ্রীদাম দাসের পুত্র।

বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারী) দুপুর সাড়ে ১২টার সময় সীতাকুণ্ডের কুমিরা ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত কারখানায় এঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় রনজিতের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বলে জানা গেছে।

বিষয়টি চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, কারখানায় কাজ করার সময় গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরণে রঞ্জিত দাস নামে এক শ্রমিক মারা গেছেন। তাকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ কারখানাটিতে গলানো উত্তপ্ত লোহার লাভা গায়ে পড়ে ভারতীয় নাগরিক কে ওয়াল সিংসহ সাতজন দগ্ধ হয়েছিল। দগ্ধ অপর শ্রমিকরা হলো নুরুজ্জামান, শাহিন আলম, আমির হোসেন, টিপু সুলতান, রাবিন্দ্র ও শহিদুল ইসলাম।

একই বছর ১০ এপ্রিল ভোরে লৌহজাত পণ্য লোডিংয়ের সময় লোহার পাতের চাপায় নিহত হন জিপিএইচের কারখানার শ্রমিক রণজিৎ বর্মন। নিহত রণজিৎ রংপুর পীরগাছার মোহন চন্দ্র বর্মনের সন্তান। ১৩ নভেম্বর নিহত হন মো. মোস্তফা নামের আরও এক শ্রমিক। নিহত মো. মোস্তফা কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানার বারশিকুরার এলাকার মো. জসিমের ছেলে। এ সময় মো. রাশেদ নামে এক শ্রমিক গুরুতর আহত হন।

১০ অক্টোবর ২০১৭ জিপিএইচ ইস্পাত কারখানার তরল লোহার ট্যাংক (ফার্নেস) বিস্ফোরণে শাহ আলম, দমিনি, আনোয়ার হোসেন, মিজানুর রহমান, সোলায়মান, মিনহাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর, শফিকুল ইসলাম ও আলাউদ্দিনসহ ১১ শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন। ৬ জনকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

ওই ঘটনায় শাহ আলমের শরীর শতভাগ দগ্ধ হয়েছিল, তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দমিনি ও সোলায়মানের শ্বাসনালীসহ শরীরের ৯০ ভাগ দগ্ধ হয়েছিল। আনোয়ারের শরীর ৬০ ভাগ দগ্ধ হয়েছিল। শাহ আলমের মৃত্যুর খবর জানা গেলেও তিন জনের ভাগ্যে কী ঘটেছিল সেটি আর প্রকাশ হয়নি।

বিভিন্ন সময় শ্রমিক হতা-হতের ঘটানায় আলোচনায় আসা জিপিএইচ পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসিয়ে গত বছর সংবাদ শিরোনাম হয়েছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলশী কার্যালয়ে এক শুনানি শেষে জিপিএইচ অক্সিজেন প্ল্যান্টকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।

এবিষয়ে জিপিএইচ’র পরিচালক ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমাস শিমুলের মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করে এইচআর থেকে ফোন করে বিস্তারিত জানানো হবে জানান।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।